সিলেটে ৬ বেসরকারী হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক :: সিলেট নগরীর কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন এক রোগী। মারা যাওয়া ওই মহিলা শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তার পরিবারের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তাকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে তাদের। নানা অজুহাতে কোন হাসপাতালই তাদের রোগীকে ভর্তি করেনি।

জানা যায়, সিলেট নগরীর কাজিরবাজার মোগলটুলা এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা (৬৩) বিগত ৩০-৩৫ বছর ধরে অ্যাজমা রোগে ভুগছেন। রবিবার (৩১ মে) রাত বারোটার দিকে তার শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হয়। রাত সোয়া বারোটার দিকে অ্যাম্বুলেন্স করে প্রথমে সোবহানীঘাটস্থ আল-হারামাইন হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ওখানে জরুরি বিভাগ তাকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে রেখেই আইসিইউ নাই বলে অন্য কোন হাসপাতালে যেতে বলে। পথিমধ্যে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা না দিয়ে রোগীকে নর্থ ইস্ট মেডিকেলে নেয়ার পরামর্শ দেন। নর্থ ইস্ট হাসপাতাল যাওয়ার পর অক্সিজেন সুবিধা নেই বলে ওখানেও তাকে রাখা হয়নি। রোগীর স্বজনরা তাকে আবারও সোবহানীঘাটস্থ মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসলে বয়স্ক রোগীদের আইসিইউ ব্যবস্থা নেই বলে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। তবে রোগীর স্বজনরা বাগবিতণ্ডা করে সেখান থেকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ করেন।

এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় সিলেট নগরীর তালতলাস্থ পার্ক ভিউ হাসপাতালে, সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীকে রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে আসার পর রোগীকে এক্স-রে ও অন্যান্য পর্যবেক্ষণের পর ওসমানী হাসপাতালে দ্রুত প্রেরণের জন্য বলেন। তখন রোগী প্রচন্ড বুকের ব্যাথায় কাতরাচ্ছিলেন।

বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে শংকটাপন্ন রোগীকে নিয়ে ওসমানী হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হয় অ্যাম্বুলেন্স। রাত আড়াইটার দিকে ওসমানী হাসপাতালের গেইটে পৌঁছামাত্র ওই মহিলা মারা যান। হাসপাতালের ইর্মাজেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।

দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও শংকটাপন্ন অবস্থায় সিলেটের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মারা যাওয়া রোগীর পরিবারের স্বজনরা।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *