সংবাদ সম্মেলন: কুচক্রী মহলের চক্রান্তের শিকার ওসমানীনগরের ব্যবসায়ী সহিদুল

কুচক্রী মহলের ইন্ধনে সাজানো ঘটনায় সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের ব্যবসায়ী নেতা সহিদুল ইসলাম চৌধুরী আটক হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী তাহমিনা বেগম চৌধুরী। স্বামীর অবর্র্তমানে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলেও জানান তিনি। তাহমিনা এও বলেন, অতীতে ওই চক্র তার পরিবারকে নানাভাবে মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে; যা পুলিশি তদন্তে কিংবা আদালতে মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়।

শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবের আমীনুর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গত ২১ অক্টোবর রাতে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ সহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে আটক করে র‌্যাব। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ওসমানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। বর্তমানে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে তাহমিনা চৌধুরী বলেন, ‘সহিদুল ইসলাম চৌধুরী কেমন মানুষ- গোয়ালাবাজারের মানুষ ভালো করেই জানেন। এ কারনে তার গ্রেফতারের পর প্রতিবাদের ঝড় উঠে এলাকায়। গত ২৪শে অক্টোবর স্থানীয় গোয়ালাবাজারে কয়েক হাজার মানুষ মানববন্ধন করেন। আর এই প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে তারা সহিদুল ইসলাম চৌধুরীর মুক্তির দাবি করেন। পাশাপাশি সহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে ভালো মানুষ ও ব্যবসায়ী নেতা হিসেবেও আখ্যায়িত করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘র‌্যাবের বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি র‌্যাবকে এ ঘটনার জন্য দোষারূপ করছি না। তবে- র‌্যাবের কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শুধু আমার নয়, এলাকার মানুষেরও সন্দেহ জমাট বেধেছে। কিছু সংখ্যক কর্মকর্তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারনে একটি সুশৃংখল বাহিনী বিতর্কিত হোক আমি সেটা চাই না। এ কারনে আমি র‌্যাবকে এ ঘটনার দায়ী করছি না। আমি দায়ী করছি কুচক্রী মহলকে। যারা বিগত কয়েক বছর ধরে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার পর মামলা দিয়ে বিপর্যস্থ করে তোলেছে। তারা বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করেছিল আর সবকটি মামলাই পুলিশি তদন্তে কিংবা আদালতে মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়েছে। আমার পরিবারের বিপর্যস্থ অবস্থার কথা জানিয়ে গত ২০১৬ সালের ১৩ই জানুয়ারি আমার পরিবারের সদস্য রোকশানা বেগম চৌধুরী সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে পুরো ঘটনা বলেছেন। আর ওই ঘটনার জের ধরেই র‌্যাবকে ব্যবহার করে আমার নিরপরাধ স্বামীকে ইয়াবা দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে। যা শুধু ন্যাক্কার জনকই নয়, এই ঘটনা অতীতের সব ঘটনাকেও হার মানিয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সহিদুল ইসলাম চৌধুরীর ফুফু জেবু চৌধুরী ও তার পরিচিত জন মিজান এলাহী ২০১৫ সালের আগষ্ঠ মাসে একই কায়দায় সহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে অস্ত্র দিয়ে ফাসানোর চেষ্ঠা করেছিলেন। ওই সময় তারা জালাল নামের একজনকে দিয়ে আমাদের বাড়িতে অস্ত্র রাখতে পাঠায়। র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে জালালকেই অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসেন। ভাগ্য সহায় ছিল বলেই ওই সময় রেহাই পান সহিদুল ইসলাম চৌধুরী। কিন্তু এবার তারা সফল হয়েছে। ইয়াবা দিয়ে তারা গ্রেপ্তার করিয়েছে সহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে। আমরা সহ এলাকার লোকজন ও ব্যবসায়ীরা ধারনা করছি- কোনো কর্মকর্তার লন্ডন কানেকশনে এমন সাজানো ঘটনা ঘটানো ঘটেছে। এতে স্বার্থ জড়িত রয়েছে। এর কারন- জেবু চৌধুরী ও মিজান এলাহী লন্ডনে বসবাস করছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার স্বামীর গ্রেফতারের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন। একই সাথে তার স্বামী প্রকৃতপক্ষে দোষি হলে তার বিচার দাবি করবেন বলেও জানান; তবে নির্দোষ হলে যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচার চাইবেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে তাহমিনার সন্তান মো. সাফোয়ান চৌধুরী ও তানিশ চৌধুরী, মা মিনারা বেগম, ভাই নজরুল ইসলাম, সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য আশিক মিয়া, সাবেক মেম্বার বাবলু মিয়া, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, শফিউল আলম, এম এ পলাশ, জুনেদ আলম, মহসিন রহমান উপস্থিত ছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *