ভুক্ত হয়েছে যেসব কলেজ সবকটিরই উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট  ফলাফল এবার অতি নিম্ন মানের খারাপ ছিল 

আজিজুল ইসলাম সজীব :: হবিগঞ্জের জাতীয়করণ হওয়ার তালিকায় থাকা কলেজগুলোতে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে। সরকারি হওয়ার আগেই সেখানে সরকারি কলেজ গুলোর মতো দায়সারা দায়িত্ব পালনের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এবছর সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৬২ দশমিক ১১ শতাংশ। হবিগঞ্জ জেলার পাসের হার ৫৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর জাতীয়করণের তালিকায় থাকা বানিয়াচং উপজেলার জনাব আলী ডিগ্রি কলেজের পাসের হার ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।

জাতীয়করণের তালিকায় থাকা বাহুবলের সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিরপুরের আলিফ সোবহান চৌধুরী কলেজ থেকে ৭৩৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ২৮৬ জন। পাসের হার ৩৯ দশমিক ০২ শতাংশ।

মাধবপুর উপজেলার জাতীয়করণ তালিকায় থাকা মনতলা শাহজালাল কলেজের পাসের হার ৪২ দশমিক ১৩ শতাংশ। আজমিরীগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের পাসের হার ৫৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। নবগঠিত শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের পাসের হার ৫২ দশমিক ০২ শতাংশ। লাখাই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কলেজের পাসের হার ৫৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

এদিকে সরকার প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে কলেজকে জাতীয়করণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

ফলাফল বিপর্যয় পর্যালোচনার জন্য বাহুবল উপজেলার আলিফ সোবহান চৌধুরী ডিগ্রি কলেজে শনিবার (২১ জুলাই) দুপুরের দিকে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বানিয়াচং উপজেলার জনাব আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সাফিউজ্জামান বলেন, এই এলাকার সব কলেজেই খারাপ ফলাফল করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের বড় একটি অংশ কর্মজীবী। তারা মাঝে মাঝে ক্লাস করে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসের প্রতি অমনোযোগী। এছাড়াও বোর্ডের কড়াকড়ি এবং প্রশ্ন কঠিনের পাশাপাশি মূল্যায়নের দিক থেকে কোয়ালিটি মেইনটেইন করা হয়েছে বলে তার কলেজের ফলাফল খারাপ হয়েছে।

আলিফ সোবহান চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রের অভিভাবক পশ্চিম জয়পুর গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবেই এবছর ফল বিপর্যয় ঘটেছে।

বানিয়াচং উপজেলার শেখের মহল্লা এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে জনাব আলী ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তিনি তার ছেলেসহ কলেজের ফলাফলে হতাশা ব্যক্ত করেন।

লাখাই মুক্তিযোদ্ধা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাবেদ আলী জানান, তার কলেজটি প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। অন্যান্য কলেজের তুলনায় তার কলেজের ফলাফল ভালো হয়েছে।হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। লেখাপড়ার মান উন্নয়ন এবং ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য একটি কর্ম পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হচ্ছে তাদের আরও ভালো ফলাফল অর্জন করা উচিত ছিলো। এতে তাদের জাতীয়করণের যৌক্তিকতা প্রমাণ হতো এবং তাদের দাবি আরও সুপ্রতিষ্ঠিত হতো।

কি কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *