হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অসদাচরণে অতিষ্ট স্টাফরা

আজিজুল ইসলাম সজীব:: হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি তাঁর সহকর্মীদের মূর্খ এবং অসভ্য বলে গালি দেওয়ার পাশাপাশি নিজে একজন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার দাম্ভিকতা প্রকাশ করেন। তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্টাফ এবং মাঠপর্যায়ের কর্মীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন। সাধারণ লোকজনের সঙ্গেও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

শহরের শায়েস্তানগর এলাকার তাহের মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবর দেয়া অভিযোগে জানান, গত ১৫ জুলাই তাঁর বোনের নিয়োগ পরীক্ষার ফল জানতে তিনি ওই অফিসে যান। সেখানে তিনি দেখতে পান উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শিরিন আক্তার তাঁর এক স্টাফকে গালমন্দ করে মারতে উদ্যত হন। এরই মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষার ফল কবে দেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে অকথ্য ভাষায় গালামন্দ করেন। শিরিন আক্তারের ভাষ্য, ‘হবিগঞ্জের লোকেরা যেমন অশিক্ষিত, তেমনি অসভ্য। এ কাজ নিয়ে কোন সাহসে একজন বিসিএস ক্যাডারের কাছে আসলি? আমার অফিস থেকে বের হয়ে যা। অফিসের স্টাফরা পরিবার পরিকল্পনা সিলেট বিভাগের পরিচালক বরাবর গত ২৫ জানুয়ারি শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। সেই অভিযোগে বলা হয়, অফিসের স্টাফদের সঙ্গে শিরিন আক্তার এমন ব্যবহার করেন, যেন সবাই তাঁর চাকর।

অশালীন ও কর্কশ ভাষায় সবাইকে তিনি গালাগাল করেন এবং বদলি করে দেওয়ার হুমকি দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টাফ বলেন, ‘৩০ বছর যাবৎ চাকরি করছি; কিন্তু এমন অফিসার দেখিনি। এমন অসভ্য ভাষায় একজন কর্মকর্তা ও শিক্ষিত মানুষ গালামন্দ করতে পারেন, তা কোনো দিন কল্পনাও করিনি।’ এর আগে গত ৩ এপ্রিল পরিবার পরিকল্পনা হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রওশন আরা বেগম। অভিযোগে তিনি বলেন, ৩০ বছর যাবৎ চাকরি করে অফিসে আলাদা মূল্যায়ন পেলেও শিরিন আক্তারের বাজে আচরণে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বলেন, ‘এটি অফিশিয়াল বিষয়। আপনি বাইরের লোক। আপনার সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলব না।’

এ বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. নাছিমা খানম ইভা জানান, বিষয়টি সিলেট বিভাগীয় অফিস দেখছে। তারা এ ব্যাপারে তদন্ত করেছে। পরিবার পরিকল্পনা সিলেট বিভাগের পরিচালক কুতুবউদ্দিন বলেন, ‘এ ব্যাপারে স্টাফদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করা হয়েছে। শিরিন আক্তারের খারাপ আচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ডিজি অফিসে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *