সিলেট ছাত্রদল কি অভিভাবকহীন?

নিজস্ব প্রতিবেদক:: এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেওয়া সিলেট ছাত্রদল যেন আজ কান্ডারীবিহীন মাঝ সাগরে ভাসমান একটি জাহাজ যে গন্তব্যের খোঁজে প্রতিনিয়ত ঢেউয়ের তোড়ে এদিক ওদিক ঘুরছে। কেন্দ্র ঘোষিত যেকোন কর্মসূচিকে ঘিরে সিলেট ছাত্রদল যেন বিভাজনের উন্মত্ত প্রতিযোগিতায় মেতে উঠে। যেকোন কর্মসূচির পর ১০ থেকে ১৫ টি প্রেস রিলিজ আসে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নামে। সাংবাদিকদের হিমশিম খেতে হয় নিউজ প্রচারের ক্ষেত্রে। সিলেট ছাত্রদল যেন ছোট ছোট উপদলে বিভক্ত হয়ে উপ ছাত্রদলে পরিণত হয়েছে। ১০/১৫ মিলে একটা মিছিল দিয়ে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে দেন সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র ঘোষিত ছাত্রদলের কর্মসূচিকে ঘিরে বেশ কয়েকটি মিছিল সমাবেশ হয়েছে সিলেট নগরীতে। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাঈদ আহমদের নেতৃত্বে একটি, জেলা ছাত্রদলের ১ম যুগ্ম সম্পাদক মকসুদ আহমদ এর নেতৃত্বে একটি, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল কাইয়ুমের নেতৃত্ব একটি, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সদস্য আবদুর রকিবের সহযোগিতায় ও আশরাফ উদ্দিন রুবেলের নেতৃত্বে একটি, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ- সভাপতি চৌধুরী মোঃ সোহেলের নেতৃত্বে একটি, মহানগর ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ শাকিল আহমদ এর নেতৃত্বে একটি মিছিল নগরীতে বের হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এক সময়ের শক্তিশালী একটি ছাত্র সংগঠন কোন কারণে এমন করে ছোট ছোট উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে। নাম প্রকাশে একজন ছাত্রদল নেতা বলেন, সঠিক নেতৃত্ব না থাকা এবং অছাত্র, বিবাহিত, ও বয়স্কদের ছাত্রদলের দায়িত্ব দেওয়ার কারণেই এমনটি ঘটেছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন থেকে মহানগরের কমিটি না থাকা এবং জেলা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরও নতুন কমিটি না থাকায় সিলেট ছাত্রদলের এমন হাল হয়েছে। বর্তমানে জেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা এডভোকেট সাঈদ আহমদ আইন পেশায় জড়িত থাকার জন্য তিনিও নিজ পেশা রেখে ছাত্রদলকে সংগঠিত করার কাজে মনোনিবেশ করতে পারছেন না। ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই মনে করেন যদি প্রকৃত ছাত্রদের হাতে ছাত্রদলের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া যেত এবং নিয়মিতভাবে কমিটি গঠন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা যেত তবে ছাত্রদলও সংগঠিত হতে পারত।

আজকে যেভাবে বিচ্ছিন্নভাবে মিছিল সমাবেশ হচ্ছে সেটা না করে যদি একসাথে মিছিল সমাবেশ করা যেত তবে সেটা এই ছাত্র সংগঠনটির জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনত। অনেক তৃণমূলের ছাত্রদল নেতারা বলেন, সিলেট ছাত্রদলের আজকে অভিভাবকহীন হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত কমিটি না থাকা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নতুন কমিটি না দেওয়া। কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে কিছুটা স্থবিরতা আসে সেটাই স্বাভাবিক।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *