সিলেটে শিশু-কিশোর, ও বয়স্কদের পৃথকভাবে কুরআন-নামাজ ও দ্বীনের বিভিন্ন মাসআলা শিক্ষা দিচ্ছে নাসিহা ফাউন্ডেশন। ২য় রমজান থেকে একযোগে সিলেট শহর ও শহরতলীর মোট ৭টি কেন্দ্রে নাসিহা ফাউন্ডেশনের ‘তাদরীবুল কুরআন’ প্রজেক্টের কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রতিদিন বাদ যোহর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলে কচিকাঁচাদের সূরা, দোয়া-দুরুদ এবং কিশোরদের আমপাড়া, কুরআন শরীফের পাঠদান। অন্যদিকে পৃথকভাবে বয়স্কদের প্রশিক্ষণ চলে। বিশুদ্ধভাবে ওযু শিক্ষা, সূরা শিক্ষা, নামাজ শিক্ষাসহ দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন মাসআলা-মাসাঈল শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
সিলেট নগরীর রায়নগর সোনারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও সিলেটের প্রবীণ ব্যবসায়ী মরহুম আলহাজ্ব আব্দুস সালাম রহ. এর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষে ফাউন্ডেশনের কর্ণধার মুফতি শাইখ হাবিব নূহ ও মুফতি শামীম মুহাম্মদ এই কার্যক্রমের সূচনা করেন।
এবছর নাসিহার কুরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো হলো-রায়নগর সোনারপাড়া জামে মসজিদ, দপ্তরীপাড়া জামে মসজিদ, মিরাপাড়া, বটেরতল বায়তুর রহমান জামে মসজিদ, কুচাই মাঝপাড়া জামে মসজিদ, খাদিমপাড়া ইউনিয়নের বংশীধর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, বংশীধর বায়তুল মুকাররাম জামে মসজিদ, টিলাপাড়া, এয়ারপোর্টস্থ ওমর ইবনুল খাত্তাব জামে মসজিদে চলছে কুরআন শিক্ষা প্রশিক্ষণ।
সরেজমিনে পরিদর্শন টিম সবগুলো সেন্টার ভিজিট করে গণমাধ্যমকে জানায়, উপরোক্ত ৭টি কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ৬শ’ শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। যাদের বইপত্র থেকে শুরু করে যাবতীয় শিক্ষা উপকরণের ব্যয় ফাউন্ডেশনটি বহন করছে। শুধু তাই নয়, শিশু ও বয়স্কদের প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করছেন শিক্ষকরা। আন্তরকিতার সাথে কুরআনে কারিমের খেদমত করে যাচ্ছেন।
বংশীধর জামে মসজিদ কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে শিশুরা কুরআন শিখছে। নাসিহার এই আয়োজনে খুশী এলাকার সাধারণ মুসল্লিারাও। কথা হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এবছরসহ গত ৩বছর থেকে আমাদের এই মসজিদে চলছে নাসিহা ফাউন্ডেশনের ‘তাদরীবুল কুরআন’ প্রজেক্ট। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও যে দ্বীন শিখতে পারছেন, নিজেদের সূরা কালাম শুদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এটাই স্বার্থকতা। তিনি এলাকার পক্ষ থেকে নাসিহার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
নাসিহা ফাউন্ডেশনের স্বপ্নদ্রষ্ঠা বরেণ্য আলেম ও ইসলামিক স্কলার মুফতি শাইখ হাবীব নূহ বলেন, রমজান কুরআন নাজিলের মাস। এই মাসটি আমাদের কাছে আসে কুরআন শিক্ষার সুবর্ণ সুযোগ নিয়ে। তাই সময়কে গনীমত মনে করে আমাদের ঈমানী তাকাযা তথা চাহিদা হলো কুরআন শিক্ষা অর্জন করা। তেলাওয়াত শুদ্ধ না হলে নামাজ হবে না। আমার মরহুম আব্বাজান রহ. এর খুব ইচ্ছা ছিল যে মুসলমান যুবক, বয়স্কদের মাঝে কুরআনী শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া। সবাই যাতে শুদ্ধভাবে কুরআন শিখতে পারে।
রমজান প্রজেক্টের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রাকিব রকুর নেতৃত্বে পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন ক্বারী মাওলানা আতিকুর রহমান নগরী, মো. দিলদার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রব সায়েম, সাধারণ সম্পাদক হাসিব আহমদ মাসুম সার্বিকভাবে তদারকি ও পরিদর্শন করছেন।
প্রচার প্রকাশনাসহ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নাসিহার এই আয়োজনকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ফাউন্ডেশনের অন্যতম সদস্য আব্দুল আল্লাম রামীম ও আব্দুল কাইয়ূম।