সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান বলেছেন, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ইতিহাস একটি জাতির এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান মাধ্যম। লেখকরা তাদের লিখনির মাধ্যমে জাতির পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেন। তাদের কলমের মাধ্যমে জাতি এগিয়ে যাওয়ার পথনির্দেশনা পায়। তাই লেখকরা হচ্ছেন সমাজের উচ্চস্থরের নাগরিক।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সিলেট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শেকড়সন্ধানী লেখক, কবি ও গবেষক সরওয়ার ফারুকীর ইতিহাসভিত্তিক বই ‘কিশোর কানাইঘাট’—এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বইয়ের প্রকাশক প্রতিষ্ঠান ‘দোআঁশ পাবলিকেশন্স’—এর আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কানাইঘাট ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম। দোআঁশ—এর স্বত্বাধিকারী লুৎফুর রহমান তোফায়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন গীতিকার শাহজাহান শাহেদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, বিশিষ্ট কবি কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক কবি আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ জিল্লুর রহমান, সিলেট প্রেসক্লাবের সহ—সভাপতি এম এ হান্নান, শাবিপ্রবির অবসরপ্রাপ্ত ইনস্ট্রুমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ জাকারিয়া, গল্পকার ও সাংবাদিক সেলিম আউয়াল, শাবিপ্রবির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান কাওছার আহমদ, কানাইঘাট সমিতি সিলেট মহানগরের আহ্বায়ক আলতাফুল হক, কবি বাছিত ইবনে হাবীব, কবি নাজমুল আনসারী, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, কানাইঘাট উপজেলা সভাপতি মো. এখলাছে এলাহী ও ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন লেখক ও সমাজসেবক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম, এশিয়ান টিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান শাহজাহান সেলিম বুলবুল, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী আহমদ সালেহ বিন মালিক, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সহসভাপতি গোলজার আহমদ হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রশীদ, ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর, কবি ও ব্যাংকার শাহেদ আব্দুর রকীব, গীতিকার ও ছড়াকার প্রভাষক শাহীদুল মুরছালীন, সমাজকর্মী মহিউদ্দীন জাবের, লেখক শামসীর হারুনুর রশীদ, ফিজিওথেরাপিস্ট জাকির হোসাইন, তাসলিমা খানম বীথি ও জসিম উদ্দিন।
উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকার জামাল উদ্দিন, সালিম আসলাম, বাহার উদ্দিন, আব্দুল হান্নান, রুহুল আলম শাহনেওয়াজ, মোহাম্মদ রাফি, তাছনিম রহমান চৌধুরী, আল—মাসুম, আজহার উদ্দিন, নুরুজ্জামান, আবিদুর রহমান মুরাদ প্রমুখ।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ বলেন, ইতিহাস চর্চা ছাড়া কোন জাতি এগিয়ে যেতে পারে না। আর এ কাজটা করেন লেখকরা। লেখকরা সাহিত্য ও ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে জাতিকে সচেতন করে তুলেন। ‘কিশোর কানাইঘাট’ একটি ইতিহাসভিত্তিক বই। আমি এক বৈঠকে বইটি পড়ে শেষ করেছি। এটি একটি ব্যতিক্রমী বই। এই বইয়ে লেখক অত্যন্ত সহজভাবে গল্পচ্ছলে কানাইঘাট উপজেলার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। দেশের আর কোন উপজেলা নিয়ে এমন কাজ রয়েছে বলে আমার জানা নেই। যদি তা হয়ে থাকে তবে কানাইঘাট এদিক থেকে এগিয়ে। তাছাড়া দেশব্যাপী কানাইঘাটের সুনাম রয়েছে। আলিম—উলামার বিরচণক্ষেত্র হিসেবে পরিচিতি বহু পুরনো। এখন কানাইঘাটের কৃতি সন্তানরা দেশ এবং বিশ^ব্যাপী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাহিত্য, সংস্কৃতি—সাংবাদিকতাসহ নানা পেশায় গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য অর্জন করেছেন। সরওয়ার ফারুকীর মতো লেখালেখি—সাংবাদিকতায়ও কানাইঘাটের সন্তানরা দেশ—বিদেশে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে কবি সরওয়ার ফারুকীর কবিতা আবৃত্তি করেন ক্যালিগ্রাফি শিল্পী ও শিক্ষক জাহেদ হোসাইন রাহীন। দেশাত্ববোধক গান পরিবেশন করেন মহসিন এ এলাহী।