আন্তর্জাতিক ডেস্ক::
কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটলে আগামী ১৪ মে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির ইতিহাসে এই নির্বাচনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তুরস্কের সুপ্রিম বোর্ড অব ইলেকশন (ওয়াইএসকে) ঘোষণা করেছে, আগামী নির্বাচনে ৬ কোটি ৪১ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট আহমেত ইয়েনার সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে আহমেত ইয়েনার বলেন, আগামী ১৪ মে’র নির্বাচনে ৬ কোটি ৪১ লাখ ১৩ হাজার ৯৪১ জন ভোটার তাদের ভোট দেবেন। এর মধ্যে তুর্কি প্রবাসীদের পাশাপাশি তুরস্কে বসবাসকারী ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
খবরে বলা হয়েছে, তুর্কি প্রবাসীরা আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত ৭৪টি দেশের ১৭৭টি বিদেশি মিশনে তাদের ভোট দিতে পারবেন। এর মধ্যে জার্মানিতে ২৬টি ভোটকেন্দ্র থাকবে, যেখানে ৩০ লাখের বেশি তুর্কি প্রবাসী বাস করেন। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত তুরস্কের মিশনে ৯টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কে যোগ্য ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৩ জন। এর মধ্যে ৩ কোটির বেশি নারী ভোটার।
এদিকে দেশটির আসন্ন নির্বাচনে তরুণ তথা প্রথমবারের মতো ভোটার হওয়া নাগরিকরা ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনে নতুন ভোটারের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৪ হাজার ৬৭২ জন।
আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান পুনঃনির্বাচিত হতে চাইছেন, যিনি ২০১৪ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। অপরদিকে এরদোগানকে হারাতে নির্বাচনি মাঠে কাজ করছেন ছয় দলীয় জোটের প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লু। তিনি জোট ও সিএইচপি দলের নেতা।
অনেকে বলছেন, এরদোগান পুনরায় নির্বাচিত হলে আরও স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারেন। কারণ বিগত দুই দশক ধরে দেশটি শাসন করছেন তিনি। ইতোমধ্যেই অনেকে তার বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র কায়েমের অভিযোগ করে আসছেন।
তবে নির্বাচন সামনে রেখে পরিচালিত সাম্প্রতিক একাধিক জরিপে বিরোধী প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। যদিও সমীক্ষাগুলোতে দেখা যায় যে, তুরস্কের অর্থনীতির খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে কিছুটা সমর্থন হারাচ্ছেন এরদোগান।
গত বছর তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতি ৮৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পে দেশটির ১১টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে পড়েছে লাখ লাখ ভবন। নিহত হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। ভূমিকম্পে এত ক্ষয়ক্ষতির পেছনে এরদোগান সরকারের দুর্বল পরিচালনাকে দায়ী করা হয়েছে।