প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উপহারের ঘর পেয়ে খুশি ১২১৩ পরিবার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জ জেলায় ৩য় পর্যায়ে ৩৯১টি এবং ৪র্থ পর্যায়ের ৮২২টি ঘর সহ মোট ১২১৩টি পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্তসহ আনুষ্ঠানিক গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

বুধবার সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশে একযোগে এ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। এসময় জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা থেকে উক্ত অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। এ জেলায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়।

ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই দেশে কেউ ঠিকানাবিহীন থাকবে না। তিনি বলেন, আমার সবচেয়ে ভালো লাগে একটা মানুষ ঘর পাওয়ার পর তাঁর মুখের হাসি। জাতির পিতা তো দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতেই চেয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির জনক আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তিনিই ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে গুচ্ছগ্রাম করেন। দেশে কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না, আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। আমি খুবই আনন্দিত চতুর্থ পর্যায়ে ৩৯ হাজার ৩৬৫ পরিবারকে ভূমি ও গৃহ দিতে পারছি। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পারা অনেক আনন্দের।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। এ দল মানুষের পাশে থাকে। তাদের জন্য কাজ করে। আমাদের একটাই লক্ষ্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর দেশে কোনো মানুষ ঠিকানাবিহীন থাকবে না। আমরা চাই দেশের সবার ঘর-বাড়ি থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ১৯৯১-এর ঘূর্ণিঝড় আসার সময় যে ব্যবস্থা নিতে হবে, সে সময় বিএনপি সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যেহেতু আমাদের সংগঠন সাড়া বাংলাদেশে ছড়িয়ে আছে, আমি প্রথমে ফোন পাই। আমাদের চট্টগ্রাম বিশেষ করে দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চল পুরোপুরি তছনছ হয়ে যায়।

আওয়ামী লীগ প্রথম ছুটে গিয়েছিল মানুষের পাশে। লাখ লাখ মানুষ মারা যায়, আমরা নিজের চোখে দেখেছি। আমরা ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে দেখি মানুষ এবং পশু-পাখির লাশ একসঙ্গে ভাসছে। আমরা সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মানুষের পাশে দাঁড়াই, তাদের সাহায্য করি। তখনকার যে সরকার, আমরা যখন সংসদে বিষয়টা তুললাম, তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া, তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন, জানেন না তিনি। আমাদের তিন বাহিনীর প্রধান গলফ খেলছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ে যে এতো বড় ক্ষতি হয়ে গেছে তাও তারা জানতেন না।

তিনি আরও বলেন, বিমান বাহিনীর, নৌ বাহিনীর সব কিছু চট্টগ্রামে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। রাস্তা-ঘাট বন্ধ ছিল, তারপরও আমরা ছুটে গিয়েছিলাম, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সেসময় অনেক মানুষ উদবাস্তু হয়ে কক্সবাজারে বস্তিতে থাকতো। আমরা তাদের পুনর্বাসন করেছি।

বুধবার মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, রাজশাহী, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বিশ্বম্ভরপুরসহ ১৫৯টি উপজেলাকেও ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় এতে গণভবনসহ বিভিন্ন প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের সাথে জমির কাগজপত্রের মালিকানা পেয়ে এখন ভীষণ খুশি উপকারভোগীরা। তাদের অনেকেরই কাছে এরকম একটি ঘরের মালিক হওয়া ছিল স্বপ্নের মতো। অবশেষে তাদের এ স্বপ্ন পূরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রাণ খুলে দোয়াও করেছেন তারা। ঘর পেয়ে এসব পরিবার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন সুবিধাভোগীরা।

উল্লেখ্য সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ৮৪৪৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ৭০৩৪টি পরিবার জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *