চা শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি এদেশের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে:বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, দেশের সবচেয়ে বঞ্চিত, নিপীড়িত, অবহেলিত জনগোষ্ঠী চা শ্রমিক রা আজ নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা তথা অধিকার বুঝে নিতে জেগে উঠেছে। চা শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি এদেশের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরও রয়েছে পরিপূর্ণ সমর্থন কিন্তু মালিক ও উচ্চবিত্ত শ্রেণি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ট পোষকতায় শ্রমজীবী মেহনতি চা শ্রমিককে অধিকার বঞ্চিত করে রাখতে চায়। এমতাবস্থায় অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, তেলিয়াপাড়া চা বাগান থেকে প্রথম মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা প্রতিরোধ শুরু হয়েছিল। এ লড়াইয়ে চা শ্রমিকদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজ আবারো সিলেট থেকে চা শ্রমিকদের নতুন সংগ্রাম শুরু হলো। এ লড়াই জীবনের জন্য, এ লড়াই জীবিকার জন্য, এ লড়াই সুন্দর আগামীর জন্য।

তিনি বলেন, চা শ্রমিকের নূন্যতম মজুরি ৫০০ টাকা করা, ভূমির মালিকানা, পূর্ণাঙ্গ রেশন প্রদান, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-নারী অধিকার সংক্রান্ত ১০ দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।

গতকাল রবিবার বিকেলে চা শ্রমিক কনভেনশনের উদ্বোধনকালে তিনি বক্তব্যে এ সব কথা বলেন। চা শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে এ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দুপুরে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার শহীদ মিনারে ফিরে আসে। পরে চা শ্রমিকদের পরিবেশনায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

কনভেনশনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শাহ আলম বলেন, লড়াই সংগ্রাম ছাড়া কোনো দাবি আদায় হয় না। এ কথাটি চা শ্রমিকরা আজ বুঝে গেছে। তাই চা শ্রমিকদের আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। তারা অধিকার বুঝে নিয়েই ঘরে ফিরবে। তাই পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আগেই চা শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।

চা শ্রমিক নেতা সবুজ তাঁতি’র সভাপতিত্বে ও কনভেনশনের সংগঠক এস এম শুভর পরিচালনায় কনভেশনে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য দেন, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট ইমতিয়াজ মাহমুদ, ব্যারিস্টার মো আরশ আলী, অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফী, এম এ লায়েক, এস এ রশিদ, জলি তালুকদার, সাদেকুর রহমান শামীম, বিশিষ্ট আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ, সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, খন্দকার লুৎফুর রহমান, আনোয়ার হোসেন সুমন, পিযুষ চক্রবর্তী, খায়রুল হাছান প্রমূখ।

চা শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বুধুরাম সিংহ, সিরাজুল ইসলাম, শ্রীরাম মাহালী, সন্ধ্যা রাণী ভৌমিক, বিমল বাকতি, নূরে আলম, ঊমা রাণী তাঁতি, বিদ্যা চাষা, সুমন ঘোষ, আলোক কুমার গোয়ালা, রজত কুমার রঞ্জু, জয় কৃঞ্চাল সাহা, শ্রীমতি প্রধান, শ্রীপন পাত্র, বাবুল আহমদ, রতন ওরাং, রাসেল আহমদ, লালন পাহান, রোখসানা বেগম, বকুল ভৌমিক, সুজাতা বিশ্বাস, লিটন মৃধা, বর্মা মৃধা প্রমুখ।

এ সময় চা শ্রমিক প্রতিনিধিরা বলেন, টানা ১৯ দিন আন্দোলন করে আমাদের মজুরি বেড়েছে মাত্র ৫০ টাকা৷ এ মজুরি দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। তাই ৫০০ টাকার মজুরির দাবিতে আমাদের আবারো আন্দোলনে নামতে হবে। যা শ্রমিকদের দাবি দাওয়াকে দমিয়ে রাখতে চায় তাদেরও চিহ্নিত করতে হবে। যারা শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করবে তাদের নিয়েই আগামীর আন্দোলন করতে হবে৷ চা শ্রমিক জাতীয় কনভেনশনে ১০ দফা দাবিনামা চুরান্ত করা হয়। কনভেনশনে চা শ্রমিকদের মধ্য থেকে  সর্বসম্মতিক্রমে সবুজ তাঁতি কে আহবায়ক করে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া সর্বসম্মতিক্রমে এস.এম. শুভ কে সমন্বয়ক করে ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি এবং ৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *