আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: দিন ডুবলেই কাল নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মধ্যবর্তী নির্বাচন দেখতে চলেছে মার্কিনরা।
এ বছর নির্বাচনের কেন্দ্রীয় ও রাষ্ট্রীয় ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৬৭০ কোটি (১৬.৭ বিলিয়ন) ডলার।
সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে নাম কুড়াচ্ছে ‘উচ্চাভিলাষী নির্বাচনি বাজেটের’। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকেও পেছনে ফেলেছে।
২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ‘আলোচিত খরচ’ ৫৭০ কোটি ডলারকে পিষছে পায়ের তলায়। মার্কিন রাজনীতিতে অর্থব্যয়সংক্রান্ত হিসাব রক্ষাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওপেন সিক্রেটের সাম্প্রতিক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে-হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদের চেয়ে সিনেটের মাঠেই কড়ি উড়ছে বেশি।
৮ নভেম্বরের ভোটযুদ্ধে আগামী দুই বছরের জন্য পুনরায় দুই কক্ষের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পার্টি। ছেড়ে কথা বলছে না বিরোধী রিপাবলিকানরাও। নেতা-প্রার্র্থী-সমর্থকদের পাশাপাশি অনুদান আসছে সব শ্রেণি থেকেই। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দাতা গোষ্ঠীগুলো ফেডারেল নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে খরচ করেছেন প্রায় ১৯০ কোটি (১.৯ বিলিয়ন) ডলার, যা ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ১৬০ কোটি ডলারকে অতিক্রম করেছে। মার্কিন ধনকুবেররা এখন পর্যন্ত মধ্যবর্তী নির্বাচনে রেকর্ড ৮৮ কোটি (৮৮০ মিলিয়ন) ডলার ব্যয় করেছেন। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, এর বেশির ভাগই রিপাবলিকানদের পক্ষে। আমেরিকান ফর টেক্স ফেয়ারনেস-এর তথ্য অনুসারে ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের তুলনায় ধনকুবেরদের ব্যয় বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। আগামী সপ্তাহে তা বেড়ে ১০০ কোটির কাছাকাছি পৌঁছাবে বলেও আশা করা হচ্ছে। আমেরিকান ফর ট্যাক্স ফেয়ারনেসের নির্বাহী পরিচালক ফ্রাঙ্ক ক্লেমেন্টে বলেছেন, ধনকুবেররা মতাদর্শ ও দল উভয়কেই অর্থায়ন করছে। সবার জন্য কাজ করবে এমন গণতন্ত্র পেতে হলে এমন বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থের প্রভাবকে রোধ করতে হবে। ওপেন সিক্রেটের নির্বাহী পরিচালক শিলা ক্রুমহোলজ বলেন, ‘২০২২ সালের নির্বাচনের মতো অন্য কোনো মধ্যবর্তী নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে এত অর্থ ব্যয় দেখা যায়নি। সবচেয়ে ব্যয়বহুল সিনেট প্রতিযোগীদের মধ্যে রয়েছে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, অ্যারিজোনা এবং ওহাইও। দৌড়ে পিছিয়ে নেই ডেমোক্র্যাটরাও।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ধনকুবেরদের দু-হাতে ডলার উড়ানোর সংস্কৃতি নতুন কিছু নয়। এখন পর্যন্ত শীর্ষ দাতা হলেন জর্জ সোরোস, যিনি মধ্যবর্তী নির্বাচনে মোট ব্যয় করেছেন ১২.৮ কোটি ডলার। দ্বিতীয় বৃহত্তম ধনকুবের দাতা ছিলেন রিচার্ড উইহেলিন এবং তার স্ত্রী এলিজাবেথ। তারা রিপাবলিকান প্রার্থীর জন্য ব্যয় করেছিলেন ৬.৭ কোটি ডলার। ফেডারেল নির্বাচন চক্রে ৬.৬ কোটি ব্যয় করে তৃতীয় স্থানে আছেন আরেক ধনকুবের কেন গ্রিফান। ৪.৭ কোটি ডলার খরচ করেছেন অপশন ট্রেডিং জায়ান্ট সুসকেহানা ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জেফরি ইয়াস। আছেন রাজনৈতিক অঙ্গনের নব ধনকুবের ক্রিপ্টোকারেন্সি এজেন্সি এফটিএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও স্যাম ব্যাংকম্যান ফেইড্র। যিনি আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১০০ কোটি ডলার খরচ করবেন।