বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে পার্থক্য গড়বে যে চারটি বিষয়

স্পোর্টস ডেস্ক:: টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে আজ মঙ্গলবার।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শুরু হবে এই ম্যাচটি। খবর বিবিসির।

ক্রিকেটে আফগানিস্তান বাংলাদেশের তুলনায় তরুণ একটি দল হলেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এই দলকে হারাতে বাংলাদেশ দলকে বেগ পেতে হয়।

পরিসংখ্যানেও এগিয়ে আফগানিস্তান, মুখোমুখি আট দেখায় পাঁচটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।  তাই এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে, সেটা মেহেদী হাসান মিরাজের সংবাদ সম্মেলনেই স্পষ্ট।

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচে যে চারটি বিষয় পার্থক্য গড়বে, সেগুলো হলো- টস জেতা, আফগানিস্তানের বা হাতি ফাস্ট বোলার ফজল হক ফারুকিকে সামলানো, আফগান স্পিনত্রয়ী- রশিদ, মুজিবের সঙ্গে অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে সামলানো এবং আফগানিস্তানের টপ অর্ডারের সঙ্গে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের পার্থক্য।

২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়েছিল আরব আমিরাতেই, এখানে তখন টস বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

প্রথম কারণ এই ফরম্যাটে লক্ষ্য জানা থাকাটা ভালো, আবার লক্ষ্য যদি সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে যায় সেক্ষেত্রে বিপদ, তাই নিজেদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে পরিকল্পনার বাস্তবায়নটা মিললেই সাফল্য পাওয়া সম্ভব।

যেমন আবুধাবি বা দুবাইয়ে কোনও দল টসে জিতেই বল করার সিদ্ধান্ত নেয় সহজে, প্রথম দুই ম্যাচে স্পষ্টত দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা দল জিতেছে।

কিন্তু ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের পরিসংখ্যান বলছে এখানে প্রথম ইনিংস গড় ১৫০, দ্বিতীয় ইনিংসে গড় ১২৫।

২৫টি ম্যাচের মধ্যে ১৬টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে, বাকি নয় ম্যাচে জিতেছে রান তাড়া করা দল।

এই মাঠের সর্বোচ্চ স্কোর ২১৫, সেটা আবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানের করা, তাই টসে জিতে গেলে সাকিব আল হাসানের সিদ্ধান্ত ম্যাচে বড় ভূমিকা পালন করবে।

ফজল হক ফারুকিকে সামলানো

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সতর্কবার্তা পেয়ে গেছে ফজল হক ফারুকিকে নিয়ে। এই বছরের শুরুতে, আফগানিস্তানের বা হাতি এই ফাস্ট বোলার ঢাকা ও চট্টগ্রামে বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে বেশ ভুগিয়েছেন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে।

চলতি এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফারুকি শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডারের বিরুদ্ধে দাপুটে শুরু এনে দেন। একটি মেইডেনসহ ১১ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন, ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আফগান স্পিনত্রয়ী

বাংলাদেশ বরাবরই লেগস্পিনে দুর্বল, এক্ষেত্রে রশিদ খান বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি ভয়ের বার্তা নিয়ে আসেন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে সাত ম্যাচে ২৬ ওভার বল করে তিনি ১৪ উইকেট নিয়েছেন, ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৬ এর নিচে।

মুজিব উর রহমান নিয়েছেন ৭ উইকেট তবে তিনি ওভারপ্রতি পাঁচের একটু বেশি রান দিয়েছেন।

উইকেট নিয়ে হোক কিংবা রানে লাগাম টেনে, রশিদ, মুজিবের সাথে অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী বাংলাদেশের বিপক্ষে ভয়ানক হয়ে উঠতে পারেন। এই বোলারদের সামলানো বাংলাদেশের জন্য বড় টাস্ক।

আফগানিস্তানের টপ অর্ডারের সাথে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের পার্থক্য

আফগানিস্তানের টপ অর্ডার দ্রুত গতিতে রান তোলে, এমনকি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে তারা মাত্র ১০ ওভারের মতো সময় নিয়েছে।

একদম প্রথম বল থেকেই মেরে খেলতে পছন্দ করেন হজরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৮ বলে ৪০ রান করা গুরবাজ, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১৩৬ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন, ঘরোয়া ক্যারিয়ারে তার স্ট্রাইক রেট ১৫৪।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টপ অর্ডার আক্রমনাত্মক ব্যাটিং করতে ব্যর্থ হয়েছে সম্প্রতি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উন্নতির আশায় এই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টেকনিক্যাল কনসালটেন্টের দায়িত্বে আছেন শ্রীধরন শ্রীরাম।

তিনি আলাদাভাবে বাংলাদেশের ওপেনার নাইম শেখকে নিয়ে কথা বলেছেন, তার মতে, ‘পরিসংখ্যানে যাই থাকুক নাইম শেখ সহজাত স্ট্রোকপ্লেয়ার’। নাইম শেখের স্ট্রাইক রেট ১০৩।

 

এই ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য সুপার ফোরে ওঠার বড় সুযোগ, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আফগানিস্তান বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে, তাই আজকের ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারাতে পারলে সুপার ফোরের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *