ঢাকায় ডাক পড়ছে জেলা নেতাদের

নিউজ ডেস্ক:: চার বছর পর আওয়ামী লীগের জেলা নেতাদের ঢাকায় ডাক পড়ছে। সেপ্টেম্বরে গণভবনে দলের সম্ভাব্য বর্ধিত সভায় অংশ নিতে ডাকা হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সভা আয়োজনের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় কাউন্সিল ও পরবর্তী সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি দলীয় সংসদ সদস্যদের (এমপি) কর্মকাণ্ড এবং তৃণমূলে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কেও জেলা নেতাদের কাছ থেকে জানতে চাইবেন। এ কারণে বর্ধিত সভা আয়োজনের প্রস্তুতির সংবাদ জানার পর দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিতর্কিত এমপিরা। দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতার সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত ওই বর্ধিত সভায় ৮ বিভাগ থেকে জেলা নেতারা সারা দেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থার পাশাপাশি ওই সময়ের বিতর্কিত দলীয় এমপিদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। এর আগের বছর ২০১৭ সালের ২০ মে জেলা নেতারা গণভবনে আরেক বর্ধিত সভায় তুলে ধরেন বেশ কিছু জনবিচ্ছিন্ন দলীয় এমপির বিতর্কিত কর্মকাণ্ড।

এর ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কপাল পুড়ে বেশ কিছু আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের। তারা দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হন। জেলার নেতারা দলের আসন্ন বর্ধিত সভায় মাঠের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ পাননি। তাই এবারের বর্ধিত সভায় চার বছরের ক্ষোভ ও যন্ত্রণার চিত্র তুলে ধরবেন-এমনটাই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জেলার নেতারা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, বিভেদ দূর করে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য বর্ধিত সভায় দিকনির্দেশনা থাকবে। জেলার নেতারা দলের সভাপতি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ এবং নির্দেশনা পেলে উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে ফিরে যাবেন। তৃণমূল নেতাদের এই উৎসাহ ও উদ্দীপনা পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণে খুবই কাজে লাগবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, সভাপতি (শেখ হাসিনা) বর্ধিত সভা আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর করোনা মহামারির মধ্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাক্ষাৎ দিতে পারেননি। তাই এই বর্ধিত সভা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। সভাপতি শেখ হাসিনা এই সভায় সবার উপস্থিতিতে প্রথমত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল এবং পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিষয়ে বক্তৃতা করবেন। সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলকে প্রস্তুত করার ব্যাপারেও দেবেন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা।

জানা গেছে, বর্ধিত সভা আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও এখন পর্যন্ত তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় দিলে সভার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি যাওয়ার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। ওই মাসেই তিনি লন্ডন হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেতে পারেন। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে তার। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ সফরের কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করেই আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির একজন দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতা।

শুধু বর্ধিত সভায় নয়, চার বছরের বেশি সময় হলো আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগর নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কোনো সভা হয়নি। এই সময় চিঠিপত্রের মাধ্যমেই নির্দেশনা গেছে আওয়ামী লীগের ৭৮ সাংগঠনিক জেলায়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *