আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি, উদ্বেগ পাকিস্তান অ্যাপেক্স কমিটির

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: আফগানিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থায় শুক্রবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের অ্যাপেক্স কমিটি। এ থেকে প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছে যে, প্রয়োজনের সময় আফগানদের ছেড়ে আসা উচিত হবে না পাকিস্তানের। আফগানিস্তানের এই অর্থনৈতিক ধ্বংসাবস্থা এড়াতে এবং মূল্যবান জীবনগুলো রক্ষা করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ত্রাণ বিষয়ক এজেন্সিগুলোর প্রতি নতুন করে আপিল করেছে কমিটি। এ খবর দিয়েছে পাকিস্তানের অনলাইন দ্য ডেইলি টাইমস।

এ অবস্থায় শুক্রবার অ্যাপেক্স কমিটি অন আফগানিস্তানের তৃতীয় মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেখানে তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানের জন্য সহায়তার জন্য জাতিসংঘ যে আপিল জানিয়েছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই।

ওই মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বা দায়িত্বপ্রাপ্ত পক্ষগুলোকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নির্দেশনা দিয়েছেন। বলেছেন, বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো উদঘাটন করতে। এক্ষেত্রে আফগানিস্তানে আছে যোগ্যতাসম্পন্ন এবং প্রশিক্ষিত চিকিৎসক সম্প্রদায়, আইটি বিশেষজ্ঞ, অর্থ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং একাউন্টিং বিষয়ক বিশেষজ্ঞ।

এসব অন্য দেশে রপ্তানির সুযোগ খোঁজার উপর তাগিদ দেন ইমরান খান। আফগানিস্তানের মানুষদের পুনর্বাসন ও উন্নয়নে রেল, খনিজ, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি এবং মিডিয়ার প্রতি সহযোগিতা বিস্তৃত করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।

এর আগে এই কমিটি আফগানিস্তানের জন্য ৫০০ কোটি রুপির মানবিক ত্রাণ সহায়তার অগ্রগতি নিয়ে। এর মধ্যে আছে ৫০ হাজার টন গম, জরুরি মেডিকেল সরঞ্জাম, শীতকালীন আশ্রয় ও অন্যান্য সরবরাহ। অ্যাপেক্স কমিটিকে জানানো হয়, আফগানিস্তান ক্ষুধা এবং ভয়াবহ এক সঙ্কটের দ্বারপ্রান্তে। বিশেষ করে মারাত্মক শীতে এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। এ সঙ্কটের কারণে জনগণ পর্যাপ্ত খাদ্য ও আশ্রয় পাচ্ছে না। কমিটি আফগানিস্তানের সমস্যা একসঙ্গে সমাধানে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে এবং অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণে ত্রাণ সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবারের এ মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি, তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ, কমিটির উপদেষ্টা আবদুল রাজ্জাক দাউদ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. মুঈদ ইউুসুফ, সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা। এর একদিন আগে তালেবানরা তাদের প্রথম বাজেট অনুমোদন দিয়েছে। তাতে বিদেশী কোনো সহায়তার উল্লেখ নেই।

আফগানিস্তানে মোট জিডিপির শতকরা ৪০ ভাগ আসে আন্তর্জাতিক সহায়তা থেকে। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকার যখন দেশে নিয়ন্ত্রণে ছিল, তখন এর পরিমাণ ছিল শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ পর্যন্ত। কিন্তু গত আগস্টে ক্ষমতা কেড়ে নেয় তালেবানরা। এর ফলে পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো আফগানিস্তানের শত শত কোটি ডলারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *