চার বছর আগে ফাঁসি কার্যকর, মোকিম-ঝড়ুর নিয়মিত আপিল অকার্যকর ঘোষণা

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক::চার বছর আগে ফাঁসি কার্যকর হওয়া চুয়াডাঙ্গার মোকিম-ঝড়ুর নিয়মিত আপিল অকার্যকর ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।

মোকিম-ঝড়ুর নিয়মিত আপিলের পক্ষে আইনজীবী আসিফ হাসান মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের জেল আপিল নিয়মিত আপিলের সমন্বয় চান। তিনি ফাঁসির আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এবং সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা ও আইনজীবীদের জন্য একটি নীতিমালার আবেদন জানান।

তিনি বলেন, এটাতে (নিয়মিত আপিলে) তো আর কিছু করার নাই। এটা (নিয়মিত আপিল) অকার্যকর হয়ে গেছে। জনগণের স্বার্থে একটা গাইডলাইন দিয়ে দেন। এটা আমার চাওয়া।

বিচারপতি ইমান আলী এ সময় বলেন, আজকে যদি আমাদের সব কম্পিউটারাইজড (প্রযুক্তিনির্ভর আদালত) থাকত, তাহলে এটা (নিয়মিত আপিল নিষ্পত্তির আগে আসামির ফাঁসি) হতো না। কোনো কাজ করতে দেবেন না আপনারা (আইনজীবীরা), লার্নেড অ্যাডভোকেটরা কম্পিউটারাইজড হতে দেবেন না, আপনারা আপনাদের পছন্দমতো কোর্টে গিয়ে মামলা করতে চান।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এ সময় ডিসেম্বর থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট চালুর কথা বলেন। তিনি বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টে কাজ হয় দ্বিগুণ। ধরেন এখানে (আপিল বেঞ্চে বিচারকাজ চলার সময়) অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেবের প্রয়োজন হলো, কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব আছেন এনেক্স বিল্ডিংয়ে। আসতে আসতে ১৫ মিনিট সময় নষ্ট। ভার্চুয়াল কোর্ট হলে যেখানে আছেন সেখান থেকেই তিনি কোর্টে যুক্ত হতে পারবেন। তাছাড়া আপিল বিভাগের সব আইনজীবী হলেন বয়স্ক। যারা খুব নামকরা, প্রায় সবার বয়স ৭০ এর উপরে। উনারা বাসা থেকে কোর্ট করেন কোনো মুলতবি নেন না।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম সাহেব বেডরুম থেকে কোর্ট করেন। উনার মেয়ে উনাকে চেম্বারেও নামতে দেন না। আমিও ফিজিক্যাল (সশরীরে) কোর্ট খুলে দেব ডিসেম্বর থেকে। আপনারা সবাই ফিজিক্যাল কোর্টের ভক্ত।

এক আইনজীবী ইন্টারনেট যোগাযোগের বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশ ডিজিটাল হচ্ছে, এগুলো আরও বেটার হবে। পরে আদালত মোকিম-ঝড়ুর নিয়মিত আপিলটি অকার্যকর ঘোষণা করে নীতিমালাসহ রায় দেন।

মোকিম-ঝড়ুর নিয়মিত আপিল অকার্যকর ঘোষণার পাশাপাশি সর্বোচ্চ আদালত জেল আপিল নিষ্পত্তি করে খালাস দেওয়া সুজন নামের এক ব্যক্তির নিয়মিত আপিলও অকার্যকর ঘোষণা করেন।

১৯৯৪ সালের ২৮ জুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা এলাকার সাবেক স্থানীয় ইউপি মেম্বার মনোয়ার হোসেন খুন হন। সেই মামলায় ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল বিচারিক আদালত মোকিম-ঝড়ুসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে হাইকোর্টের রায়ে মোকিম-ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। এর বিরুদ্ধে ওই বছরই তারা নিয়মিত আপিল করেন, যার নম্বর হচ্ছে ১০৭/২০১৩ এবং ১১১/২০১৩।

‘ঝড়ু বনাম রাষ্ট্র’ শিরোনামে আপিল দুটি গত বুধবার (৩ নভেম্বর) ১১ নম্বর ক্রমিকে ছিল। এর আগের দিন ছিল ৩০ নম্বর ক্রমিকে। পরদিন বৃহস্পতিবার মোকিম-ঝড়ুর আইনজীবী আসিফ হাসান ও হুমায়ুন কবির দাবি করেন, আসামির নিয়মিত আপিল নিষ্পত্তির আগেই দুই আসামির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। চার বছর আগে মোকিম-ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এ নিয়ে আসামিদের করা আপিল আবেদন নিয়ে গত সোমবার (৮ নভেম্বর) আপিল বিভাগে দীর্ঘ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *