সিলেটে সিপিবি-উদীচীর উদ্যোগে ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলনের শতবর্ষ পালন

সিলেটে নানা আয়োজনে ঐতিহাসিক ২০ মে ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলনের শতবর্ষ পালন করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সিলেট জেলা। গতকাল বৃহস্পতিবার  বিকেলে সিলেটের লাক্কাতুরা ও মালনীছড়া বাগানে সিপিবি ও উদীচীর যৌথ উদ্যোগে সমাবেশ ও গনসংগীত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সিলেট জেলার সভাপতি এনায়েত হাসান মানিকের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেড আনোয়ার হোসেন সুমনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, সিপিবি সিলেট জেলার সহ-সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান, উদীচী সিলেট জেলার সহ-সভাপতি রতন দেব, ডা. অভিজিৎ দাস জয়, কোষাধ্যক্ষ সন্দীপ দেব, যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মতিউর রহমান, উদীচী লাক্কাতুরা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজল গোয়ালা, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মো.নাবিল এইচ, মহানগর সংসদের সভাপতি হাছান বক্ত চৌধুরী কাওছার প্রমুখ। এসময় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালীর সভাপতি রাজু গোয়ালা। এর আগে লাক্কাতুরা চা বাগান শহীদ মিনারে ২০ মে’র শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। সমাবেশের পর উদীচী সিলেট জেলার শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘শতবর্ষ পূর্বে ঐতিহাসিক ‘মুল্লুকে চল’ আন্দোলনের মাধ্যমে চা শ্রমিকরা যে রক্তস্নাত বিদ্রোহ তৈরি করেছিলেন তা চা শ্রমিক আন্দোলনে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। তবে এই গৌরব ও শোকাবহ দিনটি শাসকরা আড়াল করতে চায়। কারণ ২০ মে’র চেতনা কে ধারণ করে চা শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করুক তা মালিক শ্রেণি চায় না।’ এসময় তারা ২০মে কে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতির দাবি জানান।

বক্তারা আরও বলেন, ‘দেশের চা চাষ ১৬৭ বছর পার করতে যাচ্ছে। কিন্তু ১৬৭ বছরে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা পার হয়নি। আইনে থাকলেও প্রতিটি বাগানে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। ফলে চা বাগানের অনেক শিশুই অক্ষরজ্ঞান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চা-বাগানগুলোতে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা খুবই নাজুক। অভিজ্ঞ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী না থাকায় চা-বাগানগুলোতে মাতৃমৃত্যুর হার বেশি। এছাড়া চা জনগোষ্ঠীর শিক্ষিত তরুণদের বেকারত্ব দুর্বিষহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’

নেতৃবৃন্দ এসময় প্রচলিত সব সুযোগ সুবিধা বহাল রেখে (রেশন, বাসা, চিকিৎসা ইত্যাদিসহ) শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানান। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা চা শ্রমিকদের জাতিসত্তা, ভাষা ও সংস্কৃতির স্বীকৃতি প্রদান ও চা শ্রমিকদের ১০-দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *