‘বিসিএস পরীক্ষা আমার মেয়ের জীবনে কাল হলো’

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক :: ‘বিসিএস পরীক্ষা আমার মেয়ের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াল। আজ (শুক্রবার) বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। এর জন্য স্বামীকে হারাতে হলো। এখন বাচ্চা দুটোর কী হবে?’ কথাগুলো বলে অঝোরে কাঁদছিলেন চিকিৎসক শারমিন আক্তারের (২৯) বাবা মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।

এদিকে ছেলে হারানোর শোকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান ফটকের সামনে বিলাপ করে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন শারমিন আক্তারের শাশুড়ি ফরিদা খান। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ফরিদা খানের মেয়ে ইন্নরি খান। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের চিত্র এটি।


শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিলেটের দক্ষিণ সুরমা রশীদপুরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালকসহ সাত–আটজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে শারমিন আক্তারের স্বামী আল মাহমুদ ইমরান খানও (৩৬) রয়েছেন।

নিহত আল মাহমুদ সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রী শারমিন আক্তার গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জানানো হয়নি স্বামীর মৃত্যুর খবর। ওই চিকিৎসক দম্পতি চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বাসিন্দা। তাঁরা সিলেটের সুবিদবাজারে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৪২তম (বিশেষ) বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে দুই মেয়েকে সিলেটে রেখে শুক্রবার সকাল ছয়টার বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন চিকিৎসক দম্পতি শারমিন আক্তার ও আল মাহমুদ ইমরান খান। তবে সিলেট থেকে রওনা হওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশীদপুরে তাঁদের বহন করা এনা পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে সিলেটমুখী লন্ডন এক্সপ্রেস বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ইমরান। আহত হন শারমিন আক্তার। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান চিকিৎসক দম্পতির পরিবারের সদস্যরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত চিকিৎসক আল মাহমুদ ইমরান খান সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক আমজাদ হোসেন খানের ছেলে। প্রায় সাত বছর আগে শারমিন আক্তারের সঙ্গে ইমরানের বিয়ে হয়। তাঁদের সাড়ে চার বছর বয়সের ইনায়া খান ও তিন বছরের ইন্তিয়া খান নামের দুটি সন্তান আছে। তাঁদের সিলেটের বাসায় রেখে শুক্রবার বিকেলের বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে শারমিন স্বামীর সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *