মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ চার জেনারেলের ওপর নিষেধাজ্ঞায় আরো কড়াকড়ি আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকায় মিয়ানমারের চারজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের মধ্যে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল মিন আং লেইনের নামও রয়েছে।

মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ থাকায় এই চার সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে আগের চাইতেও কড়া নিষেধাজ্ঞা।

এমন সময় এলো নতুন নিষেধাজ্ঞা যখন গণহত্যার অভিযোগে দ্য হেগের আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছে মিয়ানমার।

এর আগেও এই চার সেনা কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকলেও এবারের নিষেধাজ্ঞার মাত্রা ও গুরুত্ব আগের নিষেধাজ্ঞার চেয়ে বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের কোষাগারের পক্ষ থেকে যেই চারজনকে কালো তালিকাভুক্তের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের সেনা প্রধান মিন আং লেইন ও তার ডেপুটি সো উইন।

এছাড়া উ এবং অং অং নামের আরো দু’জন বিভাগীয় কমান্ডারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এর আগে এবছরের জুলাই মাসেও এই চারজন সেনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

সেসময় এই চার সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

২০১৭ সালে ইন দিন গ্রামে বিচার বহির্ভূত হত্যার প্রমাণ পাওয়ার পরও ঐ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সেনাপ্রধানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঐ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

তবে সেসময়ের নিষেধাজ্ঞাকে অনেকটাই প্রতীকী বলে ধারণা করা হয়েছিল।

এবার এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এর ফলে নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সব ধরণের সম্পদের ব্যবহার স্থগিত করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের সাথে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সাথে জড়িত হতে পারেন না।

নিষেধাজ্ঞার বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক পরিবর্তন, অর্থনৈতিক সংস্কার ও সেনাবাহিনীর ওপর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণকে তারা সমর্থন করে।

দ্য হেগ শহরের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজে’তে রোহিঙ্গা গণহত্যায় সেদেশের সামরিক বাহিনীর জড়িত থাকার প্রমাণ পেশ করার পরদিনই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।

মিয়ানমারের ফার্স্ট মিনিস্টার নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি দ্য হেগের আদালতের কার্যক্রমে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বুধবার বক্তব্য দেয়ার কথা রয়েছে তার।

গত বছর রাখাইনে ‘গণহত্যা’ ও রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সহিংসতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভূমিকা জাতিসংঘের এক রিপোর্টে উঠে আসার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধানসহ কয়েকজন পদস্থ সেনা কর্মকর্তার অ্যাকাউন্ট বাতিল করে ফেসবুক।

সেসময় রাখাইনে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের মত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো জাতিসংঘের রিপোর্টে উঠে আসে এবং সেনাপ্রধান জেনারেল মিন আং লেইনসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার করার কথা বলা হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *