সিলেট বেতারের উন্নয়নের নামে মুজিবুর ও মনোয়ারের তামাশা !

সিলেট নিউজ টাইমস্ -প্রতিবেদক:: সিলেট বেতারের ইতিহাসে সবচেয়ে বিগ বাজেটের উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হয়েছে। অথচ এই উন্নয়ন কর্মের প্রজেক্ট প্রোফাইল আর ওয়ার্ক অর্ডার নিয়ে চলছে লুকোচুরি লুকচোরি খেলা। মুজিবুর আর মনোয়ারের এই লুকোচুরি গল্প নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। কি কাজ হচ্ছে, কোন মানের কাজ হচ্ছে, তা নিয়ে সচেতন মহলে কৌতুহল থাকলেও অদৃশ্য ইশারায় পিডি মুজিবুর রহমান আর প্রকৌশলী মনোয়ার খান তা চাপা দিয়েই রাখছেন।

সংবাদকর্মীরাও এর কোন সদুত্তর এখন পর্যন্ত আবিস্কার করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। রীতিমত রহস্যেঘেরা দুই ম এর আচরনে বিব্রত, বিভ্রান্ত উন্নয়নের পক্ষে থাকা মানুষেরা।

ডিজি অফিস সংশ্লিষ্ট একটি সুত্রের বরাতে জানা যায়, প্রায় ৫৬ কোটি (প্রস্তাবিত ৭০ কোটি এক্সটেনশন) টাকার এই উন্নয়ন কর্মকান্ডে নির্মিত হবে একটি ১০০ আসন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম, কর্মকর্তাদের থাকার জন্য একটি আধুনিক ডরমেটরী, ১০ কিলোওয়াটের একটি এফ এম ট্রান্সমিটার, বর্তমান বেতার ভবনকে আধুনিক সুবিধা সম্মত করে সাজানো, বর্তমান ষ্টুডিওকে আধুনিক ডিজিটাল ষ্টুডিওতে রূপান্তর এবং নগরীর টিলাগড়স্থ বেতারের নিজস্ব জায়গায় বাউন্ডারি দেয়াল নির্মান। উন্নয়ন প্রকল্পের এই কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রস্তাবিত স্থাপনা নির্মানের জন্য গাছ কাটা হয়েছে। এসি প্ল্যান্টের কাজও প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু বিধি বাম গোড়াতেই গলদ।

বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া প্রজেক্ট ডিরেক্টর মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আঞ্চলিক প্রকৌশলী মনোয়ার খান বেতার ভবনের সকল গাছ কেটে ফেলে ইতিমধ্যে নিলাম কার্যও সম্পাদন করেছেন। অভিযোগ রয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার গাছ ঠিকাদারের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে নাম মাত্র মূল্যে ৪ লক্ষ ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। বিনিময়ে পিডি মুজিবুর প্রকৌশলী মনোয়ার খানের মাধ্যমে ২ লক্ষ হাতিয়ে নিয়েছেন ঠিকাদারের কাছ থেকে। বন বিভাগের অনুমতি না থাকায় বর্তমানে বন বিভাগ স্থিতাবস্থা জারী করায় কাটা গাছগুলো পুরো বেতার ভবনজুড়ে পড়ে আছে, বিলাপ করছে প্রকৃতি । মনোয়ার খানের এই অনিয়মের তদন্ত করছে বন বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল মন্ত্রী (বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন) মোঃ শাহাব উদ্দিন বন বিভাগকে অনিয়মের সাথে জড়িতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশও দিয়েছেন। এসি প্ল্যান্টের কাজে ষ্টীল সীট ব্যবহারের পরিবর্তে ব্যবহৃত পুরনো সীট এবং সাধারন মানের সীট ব্যবহার করায় ইতিমধ্যে এসব বক্সে জং ধরেছে। বক্স বসাতে ঢালাই পিলার তৈরির কথা থাকলেও নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে এই কর্মটিও প্রায় শেষের পথে এমন অভিযোগও আছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ।

উন্নয়ন প্রজেক্টে আদৌও কি কি উন্নয়ন কর্ম সম্পাদিত হবে তা নিয়েও চলছে রীতিমত গোপনীয়তা। প্রজেক্ট প্রোফাইল, বা ওয়ার্ক অর্ডারে কাজের ধরন এবং কাজের মান সম্পর্কে নির্দেশনা থাকলেও আঞ্চলিক প্রকৌশলী মনোয়ার খান এখনও দেখেননি প্রজেক্ট প্রোফাইল বা ওয়ার্ক অর্ডার এমনটাই বলছেন তিনি। আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রধান আঞ্চলিক পরিচালক ফখরুল আলম। নিয়মানুযায়ী তিনি সব কাজ সম্পর্কে অবহিত থাকবেন, কিন্তু তিনিও জানেন না উন্নয়নের নামে আদৌও কি কর্ম ঘটতে যাচ্ছে। তাকে কৌশলে অন্ধকারে রেখেছেন প্রকৌশলী মনোয়ার খান। পিডি মুজিবুর রহমান সব কিছু আড়ালে রেখে উন্নয়ন কর্ম সম্পাদনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এই অন্ধকার পরিবেশ তৈরিতে তাকে বিশ্বস্থ সহচর হিসেবে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রকৌশলী মনোয়ার খান।

সার্বিক পরিস্থিতি এমন ধারনারই জন্ম দিচ্ছে। সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড, প্রজেক্ট প্রোফাইল, ওয়ার্ক অর্ডার ইত্যাদি বিষয়ে কেউ জানতে চাইলে বা এই অনিয়মের প্রতিবাদ করলে প্রকৌশলী মনোয়ার খান তাদের গায়ে কালিমা লেপন করার নতুন মিশন শুরু করেছেন। নিজের মোবাইলে এবং পার্সোনাল ডিভাইসে কথা রেকর্ড করে-তা এডিট করে রীতিমত ব্ল্যাকমেইলিং করে যাচ্ছেন। এমনকি সংবাদকর্মীরাও কোন বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের কথাবার্তাও রেকর্ড করা হচ্ছে। সুত্র এমনটা নিশ্চিত করেছে।

 

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *