সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:: সিলেটে যাত্রীবেশি ভয়ঙ্কর ডাকাত চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ওই দলের হাত থেকে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেন এক সিএনজি অটোরিক্সা চালক। ওই ৫ ডাকাত দলের সদস্য পুলিশের খাচায় বন্দি হয়েছে। তারা চালককে হত্যা করে গাড়ি ছিনতাইরে উদ্দেশ্যে ভাড়া নিয়েছিলো। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দক্ষিণ সুরমা থানার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তেতলী দারগা বাড়ীর সামনের রাস্তায় নির্জন এলাকা থেকে ডাকাতদের আটক করা হয়। ডাকাতরা চালককে হত্যার উদ্দেশ্যে হাত বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে ধারালো চাকু দ্বারা হত্যার চেষ্টা করছিলো। এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পান ঐ চালক। এর আগে বিশ্বনাথে একইভাবে চালককে হত্যা করে গাড়ি ছিনতাইর ঘটনা ঘটে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান, ডাকাতদের কবলে পড়া চালক মো. ইরা মিয়া (৩০) সহ সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তেতলী দারগা বাড়ীর সামনের রাস্তায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে টহল দিচ্ছিলো দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। এসময় নির্জন স্থানে একটি সিএনজি অটোরিক্সা দাড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। সাথে সাথে এ্যাকশনে গেলে ৫ ডাকাতকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ সদস্যরা। তখন সিএনজি অটোরিক্সা চালক ইরা মিয়াকে হাত বাঁধা ও মুখে কাপড় গুঁজা অবস্থায় উদ্ধার করে। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু, রুমাল ও গামছা জব্দ করা হয় এবং ভিকটিমের ছিনিয়ে নেওয়া সিএনজি অটোরিক্সাটিও উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, এ চক্র প্রায়শ সিএনজি অটোরিক্সা চালকদের টার্গেট করে ডাকাতি করে। ৫ ডাকাত আটক হওয়ায় এ চক্রের সন্ধান বের করা আরো সহজ হবে বলে জানান তিনি।
ভিকটিম গাড়ি চালক মো. ইরা মিয়া (৩০) জানান, গাড়িটি প্রথমে ভাড়া নেয়। এরপর হাত বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে ধারালো চাকু দ্বারা হত্যার চেষ্টা করে।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হচ্ছে এয়ারপোর্ট থানার ধোপাগুল উমদারপাড়া (বর্তমানে ঘাসিটুলা কলাপাড়া চাঁন মিয়ার বাড়ী) এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মো. জাকারিয়া (২১), তাহিরপুর উপজেলার রতনশ্রী গ্রামের (বর্তমানে ঘাসিটুলা কলাপাড়া নুর মিয়ার বাসা) সুহেল আহমদের ছেলে তুষার আহমদ (২০), একই উপজেলার কাউকান্দি গ্রামের (বর্তমানে শেখঘাট কলাপাড়া শওকতের বাসা) ফজলুল হকের ছেলে ছুফায়েল আহমদ (১৯), চাঁদপুর সদর উপজেলার ভিঙ্গুলিয়া গ্রামের (বর্তমানে ঘাসিটুলা কলাপাড়া, দূর্বার-৬৯/১) মঈনউদ্দিন খাঁনের ছেলে সাগর আহমদ (১৮) ও লাখাই উপজেলার বামুই গ্রামের (বর্তমানে ঘাসিটুলা লামাপাড়া, দূর্বার-৬২) মো. লায়েছ মিয়ার ছেলে খোকন আহমদ আব্দুল্লাহ (১৮)।
এদিকে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সিলেটের বিশ্বনাথে সিএনজি অটোরিকশা চালক কামরুল ইসলাম (১৯)’কে দক্ষিণ সুরমা এলাকায় নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে গাড়ি ছিনিয়ে নেয় ডাকাত দল। পরে ধরা পড়ে ঐ ছিনতাইকারী চক্র। তারা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে জানায়, সিএনজি অটোরিকশা ছিনতাই করার জন্যই গাড়ির চালক কামরুল ইসলামকে গলা কেটে নির্মমভাবে খুন করা হয়।
অন্যদিকে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা জানান- গাড়ি চোর চক্র দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে। দক্ষিণ সুরমার আসামীরা ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে সিএনটি অটোরিক্সাটি ভাড়া নিয়েছিলো। পুলিশের সতর্কতার জন্য গাড়ি চালক প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। তিনি জানান উদ্ধার হওয়া মো. ইরা মিয়া বাদী হয়ে মামালা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আটককৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হবে।