বিনোদন ডেস্ক:: অভিনেতা নিরব হোসেন মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও একটা সময় গিয়ে থিতু হন চলচ্চিত্রে। সে ধারাবাহিকতা এখনো ধরে রেখেছেন। পাঁচ বছর আগে তিনি ‘বাংলাশিয়া’ নামে মালয়েশিয়ার একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। শুটিং শেষ হওয়ার পর ছবির ট্রেলারও প্রকাশিত হয়। এরপরই ঘটে বিপত্তি। মালয়েশিয়ার সরকার শুধু সে দেশে নয়, পৃথিবীর কোথাও এ ছবিটি প্রদর্শন করা যাবে না বলে আদেশ জারি করে। দীর্ঘ সময় পর এসে ছবিটির জটিলতার অবসান হয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি নিরব অভিনীত ‘বাংলাশিয়া’ ছবিটি মালয়েশিয়ায় মুক্তি পাচ্ছে। সেখানকার ১১১টি প্রেক্ষাগৃহে তিন ভাষায় নির্মিত ছবিটি মুক্তি পাবে। ছবির প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছেড়েছেন নিরব।
নিরব বলেন, ‘ছবির গল্পটাকে মালয়েশিয়ার সরকার অ্যান্টি গভর্নমেন্ট হিসেবে দেখেছে। যার কারণে ছবিটা প্রায় পাঁচ বছর ধরে আটকে ছিল। তবে সম্প্রতি ছবির প্রযোজক সেন্সর বোর্ডে যোগাযোগ করলে তারা কিছু বিষয়ে কারেকশন দেয়। এরপর সে সে বিষয়গুলোতে কারেকশন করে ফের প্রদর্শনের জন্য জমা দেয়। তারপরই ছবিটি ছাড়পত্র পায়। আমি যতটুকু জানি ছবিটি থেকে ৩১টি দৃশ্য বাদ দিতে হয়েছে।’
‘আমি গর্ব করে বলতে পারি, এমন ধরনের আন্তর্জাতিক মানের ফিল্ম এর আগে বাংলাদেশের কেউ করেনি। বিষয়টা আমার জন্য ভীষণ আনন্দের। মালয়েশিয়ার মতো একটি দেশে ছবিটি ১০৬টি হলে প্রদর্শিত হবে। এটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য বড় ধরনের অর্জন।’
‘বাংলাশিয়া’ ছবিতে নিরবকে কখনো বাবুর্চি, মোটর মেকানিক্স, আবার কখনো কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীসহ বিভিন্ন রূপে দেখা মিলবে। তিনি বলেন, ‘ছবিটা যেহেতু অনেক আগে নির্মিত হয়েছে, তাই অনেকে ভাবছে ছবির গল্পটা পুরনো হয়ে যায় কিনা। আমার মনে হয়, সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশের সমস্যাগুলো প্রায় একই। আর সে বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করেই ছবিটি নির্মিত হয়েছে।’
‘আমার চলচ্চিত্র কিংবা শোবিজ ক্যারিয়ার, যেটার কথাই বলি না কেন, এই ক্যারিয়ারটা শুধু কিন্তু বাংলাদেশের জন্যই। আমি ভালো করলাম, খারাপ করলাম, সেটা বাংলাদেশের জন্যই করছি।’
নিরব ছবিটাকে তার ক্যারিয়ারের বোনাস পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘একটা গানের সিডিতে দশটা গান থাকে। সেখানে কিন্তু দুইটা বোনাস ট্রাক থাকে। আমি দেশের বাইরে যে ছবিটা করছি, এটাকে আমি বোনাস ট্রাক হিসেবে দেখি। আমার মূল ফোকাসটা কিন্তু বাংলাদেশি ফিল্মে। আমার ক্যারিয়ারের উন্নতি, উত্থান-পতন যাই বলি না কেন, এটার সবকিছু নির্ভর করছে বাংলাদেশের ক্যারিয়ারের ওপর। তাই এ বিষয়টাকে আমি ওভাবেই দেখছি। আমি এ কাজটি করতে গিয়ে কিছু বিষয় শিখেছি, এটাই আমার জন্য বড় পাওয়া।’
এই ছবিতে কাজ করতে গিয়ে নিরবের ঝুলিতে যে বিষয়টি যোগ হয়েছে সেটি হলো সময়জ্ঞান। আর এ বিষয়টি তাকে মুগ্ধও করেছে। তিনি জানান, প্রতিদিন ভোর চারটায় শুটিং শুরু করতেন তারা। আর যে ৪২ দিন শুটিং হয়েছে, কখনো এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি।
ছবিতে নিরবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন সিঙ্গাপুরের তারকা আতিকা সুহাইমি। ছবিটি নির্মাণ করেছেন নেমউই। তিনি এর আগে পাঁচটি সিনেমা পরিচালনা করেছেন। ছবির অন্য চরিত্রের অভিনয়শিল্পীরা হলেন নেমউই, ডেভিড, সাইফুল অ্যাপেক।
নিরব জানান, তার ছবির প্রযোজক চেষ্টা করছেন ছবিটি বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার জন্য। আর ছবিটির প্রচার ও প্রিমিয়ারে অংশ নেওয়ার পর ৪ অথবা ৫ মার্চ দেশে ফিরবেন।