কোটা আন্দোলনকারীদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক:: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার কেমন হবে তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছেন তরুণ ভোটাররা। কারণ এবারও তরুণ ভোটাররাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাদের ভোট পেলে পার হওয়া যাবে নির্বাচনী বৈতরণী।

এ কারণে তরুণ ভোটারদের পক্ষে টানতে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে তাদের সুবিধার কথা ভাবছে।

তরুণরাও বসে নেই। নির্বাচন সামনে রেখে ‘তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনা’ প্রকাশ করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।

তারুণ্যের ইশতেহার ভাবনায় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা। দলগুলো নিজ নিজ ইশতেহারে তারুণ সমাজের এসব দাবি-দাওয়া অন্তর্ভুক্ত করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে- এমন প্রত্যাশা তরুণদের।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী আডিটরিয়ামের সামনে এ ইশতেহার ভাবনা তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। আরও বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, নুরুল হক নুর ও ফারুক হাসান।

পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী কাজের নিশ্চয়তা প্রদান; বেকার তরুণদের সহজ শর্তে ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকার ঋণ প্রদান; ঘুষ-দুর্নীতি ও রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ; তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে কোটা প্রথার সংস্কার; চাকরির আবেদন সম্পূর্ণ ফ্রি করা; প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে এবং লিখিত পরীক্ষার ৯০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ; মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ নির্ধারণ; তথ্য যাচাইয়ের নামে হয়রানি বন্ধ; বেসরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক নিয়োগ পরীক্ষা প্রণয়ন; শিক্ষা খাতে বার্ষিক বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ; বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা; প্রশ্ন ফাঁসবিরোধী সেল গঠন; শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধে কঠোর আইন এবং মেধাপাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ; ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা; আবাসনের কৃত্রিম সংকট দূর করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বাজেটের ১০ শতাংশ গবেষণা খাতে বরাদ্দ; শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেতন কাঠামো তৈরি; মাদক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা; যুব সমাজকে গণতান্ত্রিক পরিবেশে উন্নত নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ দিতে প্রতি বছর যুব অ্যাসেম্বলির আয়োজন এবং সেখানে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ছাত্র সংসদ সদস্যদের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করা।

প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হয় ২ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর আর প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *