হবিগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী নিয়ে চরম বিপাকে জোট-মহাজোট

নিজস্ব প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জ-১ (বাহুবল-নবীগঞ্জ) আসনে নিজেদের একাধিক প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট। বিভ্রান্তিতে রয়েছেন সাধারণ ভোটার। এ অবস্থায় এখানে জোটবিহীন উন্মুক্ত নির্বাচনের আশংকা করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিষয়টি এখন তুমুল আলোচিত সমগ্র জেলায়। জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন দলের ১২ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সমন্বয়ে গঠিত মহাজোট ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২৩ দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট)-এর রয়েছে একাধিক প্রার্থী। একদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজী ও জাতীয়পার্টি’র (জাপা) আলহাজ্ব আতিকুর রহমান আতিক দাবী করছেন মহাজোটের মনোনয়ন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র শেখ সুজাত মিয়া ও গণফোরামের ড. রেজা কিবরিয়া দাবী করছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন।

শুধু তাই নয়, মহাজোটের শরিক জাপার কেন্দ্রীয় নেতা বর্তমান সংসদ সদস্য এম.এ.মুনিম চৌধুরী বাবু এবং আওয়ামীলীগ নেত্রী ও সংরক্ষিত আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ অবস্থায় ‘কাকে রেখে কাকে বাদ দেবে’ এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে উভয় জোট। বিভ্রান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ভোটাররাও। বিষয়টি এখন আলোচিত সমগ্র জেলায়।

স্থানীয় বিএনপি’র একটি অংশ মনে করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামালের আশির্বাদে শেষ পর্যন্ত ড. রেজা কিবরিয়াই হতে পারেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী। আবার অনেকেই মনে করেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন হিসেবে চমক দেখাতে পারেন শেখ সুজাত। তাদের দাবী, শেখ সুজাত বিএনপি’র পরীক্ষিত সৈনিক। জোটের কারনে বাদ দেয়া হলে জুলুমের শিকার হবেন তিনি।

এদিকে,স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাংশ মনে করে পূর্ব প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজীকেই শেষ পর্যন্ত মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে রাখতে পারেন শেখ হাসিনা। যদিও তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয় নাম সংরক্ষিত আসনের বর্তমান এমপি কেয়া চৌধুরী। মাঠ পর্যায়ের সেই জরিপও রয়েছে শেখ হাসিনার হাতে। আবার স্থানীয় জাপার একাংশ মনে করে কেন্দ্রের বিশেষ আশির্বাদ নিয়ে মরণ কামড় দিবেন আতিক। যদিও স্থানীয় জাপার একটি বড় অংশ ‘বহিরাগত’ স্লোগান তুলে প্রকাশ্যেই বিরোধীতা করছেন আতিকের। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়তই হচ্ছে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ। বিক্ষোভকারীদের দাবী, বর্তমান এমপি মুনিম বাবু মহাজোটের প্রার্থী হবার যোগ্য দাবিদার।

এ অবস্থায় স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, শেষ পর্যন্ত আসনটিতে ভেঙ্গে যেতে পারে জোট-মহাজোট। উন্মুক্ত নির্বাচন করতে পারে সকল দল। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন না পেলে ড. রেজা কিবরিয়া নির্বাচন করবেন কি-না সেটাও একটি বড় প্রশ্ন। বিশ্লেষকরা এও ধারণা করছেন মহাজোট ভেঙ্গে গেলেও অখন্ড থাকতে পারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ ক্ষেত্রে ছিটকে পড়তে পারেন শেখ সুজাত।

বিশ্লেষকদের দাবী, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি মুনিম বাবু ও সংরক্ষিত আসনের এমপি কেয়া চৌধুরী শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করতে পারেন নিজেদের প্রার্থীতা। যদিও জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দল ও মহাজোটের সমর্থন পেতে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *