হবিগঞ্জ শহরে ৩টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালত

নিজস্ব প্রতিনিধি:: হবিগঞ্জ শহরে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা ৫২, দালালদের মাধ্যমে নেয়া হয় রোগীদের, অধিকাংশ ক্লিনিকে নেই বৈধ কাগজপত্র, ডাক্তারের পরিবর্তে নার্সের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা

হবিগঞ্জ শহরের আনাছে-কানাছে ব্যাঙ্গের ছাতার গড়ে উঠেছে প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতাল। ক্ষুদ্রতম এই শহরে বর্তমানে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা ৫২। শহরের নাম মাত্র কয়েকটি সুনামধন্য ক্লিনিক ছাড়া অধিকাংশ ক্লিনিকেরই নেই অনুমতির বৈধ কাগজপত্র। নেই কোন চিকিৎসা মূল্যের তালিকাও। এসব ক্লিনিকে প্রতিনিয়ত চিকিৎসার নামে দেয়া হচ্চে অপচিকিৎসা।

ডাক্তারবিহীন নার্স দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। শুধু তাই নয়, অনেক ক্লিনিক ডাক্তার ছাড়াই করছে জমজমাট ব্যবসা। এক ক্লিনিকের ডাক্তার দিয়ে পরিচালনা করা হয় কয়েকটি ক্লিনিক। এসব ক্লিনিকের পরিচালকরা একে অপরের সহযোগিতা নিয়ে গুলোতে নিয়ম উল্টো। রোগি আগে, ডাক্তার পড়ে। পরিচালকরা প্রথমে ক্লিনিকে রোগি ভর্তি করেন। পরে হিসাব-নিকাশ মিলে গেলে তারা রোগীকে ক্লিনিকে রেখে ডাক্তারের খোজ খবর করেন।

এমন অবস্থায় ডাক্তার না পাওয়া গেলে কোন কোন ক্লিনিকে নার্সের মাধ্যমেই এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ফলে বিভিন্ন সময় ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যায়। এছাড়াও ওই সব ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট লেগেই আছে। অনেক সময় ভূল রিপোর্টের কারণে অনেক সময় অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে মৃত্যুর ঢলে পড়ছেন। যৌথ চিকিৎসার মাধ্যমে পরিচালকরা গ্রামগঞ্জ থেকে আসা সাধারণ সহজ সরল রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার অজুহাত দেখিয়ে হাতিয়ে নেন বড় অংকের টাকা। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে প্রতিটি ক্লিনিকে মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখা। কিন্তু এ আদেশ উপেক্ষা করেই পরিচালকরা ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। চিকিৎসা মূল্য তালিকা না থাকায় নিজেদের ইচ্ছেমতো অর্থকড়ি আদায় করছেন।

বিষয়টি ভ্রাম্যমান আদালতের নজরে আসলে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শহরের কোর্টস্টেশন এলাকার কয়েকটি ক্লিনিকে অভিযান চালায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছিন আরাফাত রানা, জান্নাত আরা নিপা ও তাসলিমা শিমা মুক্তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে দি জাপান বাংলাদেশ হাসপিটালকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ ও মূল্য তালিকা না থাকায় ১০ হাজার টাকা, দি নিউ লাইফ হাসাপতালকে একই অভিযোগে ১০ হাজার টাকা ও হবিগঞ্জ প্রাইভেট হসপিটাল লিমিটেডকে অগ্রিম রিপোর্ট তৈরি করে রাখা ও ভূল রিপোর্টসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় বেশ কিছু অগ্রিম রিপোর্ট জব্দ করা হয়।

ভ্রাম্যমান আদালতকে সহযোগীতা করেন পেশকার সালাহ উদ্দিনসহ হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্টেট জানান, হাসপাতাল গুলোতে অগ্রিম রিপোর্ট তৈরী ও চিকিৎসা মূল্যের তালিকা না থাকায় জরিমানা করা হয়েছে। রোগিদের ভাল চিকিৎসা প্রদানের লক্ষে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *