বিনোদন ডেস্ক:: প্রত্যেকটা তারকার ভিতর বাস করে এক সাধারণ প্রাণ। প্রাচুর্য, খ্যাতি আর চাকচিক্যের বাহিরে সেও আর আট দশটা সাধারণ মানুষের মতই। তাদেরও মায়াময় অতীত থাকে, বেদনা, বিষাদ্গ্রস্থ অতীত থাকে। হাজার আলোর ভিড়েও সেই অতীত একটুও রঙ হারায় না। আর তা যদি হয় প্রিয় বন্ধুটিকে ঘিরে তবে সেই অতীত জীবনের অংশ হয়ে যায়।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের নামী নায়িকা মাহিয়া মাহি। আসল নাম শারমিন আক্তার নিপা। মাহি হয়ে উঠার আগে এমন অতীত তার জীবনে আছে, যা তাকে এখনো পোড়ায়। ক্লাস সিক্সে তার জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা এখনো মাহিকে অপরাধী আর হতাশ করে তুলে।
সেই ঘটনা শুনুন মাহির মুখেই, তখন আমি চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী। রুপালি নামে স্কুলে এক মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব হলো। ও আমার এত ভালো বান্ধবী ছিল যে আমি কোন কারণে ক্লাস ফাইভে দুই বছর পড়ি। ও আমার জন্য ড্রপ দিয়েছিল। ও কারো সঙ্গে মিশলে আমার খুব রাগ লাগতো। উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলাম আমরা।
ক্লাস সিক্সের ফাইনাল পরীক্ষার আগের ঘটনা। হঠাৎ একদিন গিয়ে দেখি, আরেকটি মেয়ের সঙ্গে ও চুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। আমি রেগে চলে এলাম। ও আসছিল কিন্তু আমি পাত্তা দেইনি। রুপা আম্মুর মোবাইলে টানা দুইদিন কল দিয়েছে। মেসেজ করেছে কিন্তু আমি তার উত্তর দেইনি। পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখি ও নেই। আমি ভেবেছিলাম হলে গিয়ে ওকে আচ্ছামতো বকে সব মিটমাট করে নিবো। এক বান্ধবী বললো রুপা মারা গেছে। আমি আর কিছু লিখতে পারলাম না। রুপাদের বাড়িতে গেলাম। উত্তরায় ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখি শত শত মানুষ। গিয়ে দেখি ওর রুমে নিথর দেহে পড়ে আছে। ওর মা জানাল, সেদিন সকালেই সে আত্মহত্যা করেছে।
তখন মনে পড়লো আগের দিন ও ম্যাসেজ করছিল তুই যদি কথা না বলিস আমি আত্নহত্যা করবো। আজও একটি দিনের জন্যও রুপার কথা ভুলতে পারিনি। সবসময় অপরাধবোধে ভুগি। এটা আমার ভুল , হতাশা , অপরাধ যাই বলেন না কেন। আমি সবকিছু মাথা পেতে নিব। ওর পরিবারকেও জানিয়েছিলাম। তারা আমাকে মাফ করে দিয়েছে। কিন্তু আমি আমাকে মাফ করতে পারিনি।
এখনো উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে থাকেন রুপার মা-বাবা, নিয়মিত যোগাযোগ রাখি তাদের সঙ্গে।