শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( শাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা রহমানের আত্মহত্যায় প্ররোচনাদান ও নির্যাতনকারীর বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, মৌন মিছিল ও সমাবেশ করেছে শাবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে বিচারের দাবিতে সাতদিনের গণস্বাক্ষর কর্মসূচির প্রথম দিনের সংগ্রহ করা সাক্ষর সহ শাবি উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। ৮জুলাই রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসব কর্মসূচী পালন করা হয়।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাবির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা রহমানের আত্মহত্যায় প্ররোচনাদান ও নির্যাতনকারীর বিচারের দাবিতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করে শাবি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী। মানববন্ধন শেষে একটি মৌন মিছিল ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী অভি শিপলু, মৃত্তিকার বান্ধবী ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা তাহসিন প্রমুখ।
অধ্যাপক ফারুক উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, মৃত্তিকার আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। আমরা সেই কারণটা জানতে চাই এবং এর মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
সমাবেশ শেষে, মৃত্তিকা রহমানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের এবং বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর সংগ্রহিত গণস্বাক্ষর সহ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উপাচার্যের পক্ষে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন শাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল গণি।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে মৃত্তিকার স্বামী সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জুবেরির তার উপর নিয়মিত নির্মম নির্যাতনের বিষয়টি বন্ধুদের জানায়। এছাড়াও তার স্বামীর একটি মেয়ের সাথে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন মৃত্তিকা। এ বিষয়ে সকল মৃত্তিকার স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যপ্রমাণ শিক্ষার্থীদের কাছে রয়েছে বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার যথোপযুক্ত তদন্ত ও বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসের কথা বলে আয়োজকদের পক্ষে শিক্ষার্থী অভি শিপলু সমকালকে জানান, গণসাক্ষর সংগ্রহ শেষে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। পাশাপাশি পঞ্চগড় প্রেসক্লাব, নারী অধিদপ্তর, মহিলা আইনজীবি সমিতি, আইন ও শালিস কেন্দ্র সহ বিভিন্ন জায়গায় আমাদের অভিযোগের বিষয়টি জানানো হবে।
গত ৩ জুলাই পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় নিজ শ্বশুরবাড়িতে রহস্যজনক আত্মহত্যা শাবির শিক্ষার্থী মৃত্তিকা রহমান । তাঁর মৃত্যুর পর কোন তদন্ত ছাড়াই তাকে তড়িঘড়ি করে তাঁকে দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।