মাদকের তথ্য দেয়ায় চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টা

নিউজ ডেস্ক:: মাদক ব্যবসায়ীর তথ্য পুলিশকে দিয়ে সহায়তা করায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রাগঞ্জ উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জেহাদীকে হত্যা করতে পরিকল্পনা করে দুর্বৃত্তরা।

পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে ঢাকায় হত্যার জন্য কিলার বাসা ভাড়া নেয় রাজধানীর ডেমরা এলাকায়। সেখান থেকে রেকি করে ২৯ মে বংশাল থানার সিদ্দিক বাজার এলাকায় চেয়ারম্যান আবুল কাশেমকে লক্ষ্য করে ফিল্মি স্টাইলে গুলি চালানো হয়।

কিলারের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন আবুল কাশেম। এ ঘটনায় সন্দেহভাজনদের আসামি করে বংশাল থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা করা হয়।

চাঞ্চ্যলকর এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি দক্ষিণ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিমকে। কোতোয়ালি জোনাল টিমের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আহসানুজ্জামানের নেতৃত্বে ডিবি সদস্যরা তদন্ত শুরু করেন। প্রায় দেড় মাস রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার অস্ত্রসহ শুটার রাকিব হোসেন ও তাকে আশ্রয়দাতা খোরশেদকে গ্রেফতার করেছে ডিবি।

ডিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চেয়ারম্যান হত্যা চেষ্টার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। একই সঙ্গে কিভাবে চেয়ারম্যানকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় তার ছক পুলিশের কাছে জানিয়েছে তারা।

আসামিদের বরাত দিয়ে কোতোয়ালি জোনাল টিমের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আহসানুজ্জামান সাংবাদিকদের কে বলেন, লক্ষ্মীপুরের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী লাদেন মাসুমের (৪০) তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেয় স্থানীয় চেয়ারম্যান আবুল কাশেম। তথ্য অনুযায়ী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ওই মাদক ব্যবসায়ী। এতে ক্ষুব্ধ হয় তার সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা পরিকল্পনা নেয় চেয়ারম্যানকে হত্যার। খুনের ঘটনা এলাকায় (লক্ষ্মীপুর) হলে তাদের ঘাড়ে দোষ পড়বে। তাই তারা কৌশল পাল্টিয়ে স্থান নির্ধারণ করে ঢাকায়। চেয়ারম্যান ঢাকায় এলে তাকে সেখানেই হত্যা করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী তারা নিয়মিত খোঁজখবর নিতে থাকে। ইতিমধ্যে তারা জানতে পারে চেয়ারম্যান রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় আসবে। এ খবরে কিলার রাজধানীর ডেমরায় খোরশেদ নামে এক ব্যক্তির বাসায় অবস্থান নিয়ে সেখানে অস্ত্র নিয়ে আসে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, চেয়ারম্যান ঢাকায় আসার পর তারা তাকে রেকি করতে থাকে। চেয়ারম্যানকে হত্যার জন্য সাতবার উদ্যোগ নেয়। ষষ্ঠবার ব্যর্থ হওয়ার পর সপ্তম দিনে তারা চেয়ারম্যানকে গুলি করে। ২৯ মে রাতে বংশাল থানার সিদ্দিক বাজার এলাকায় একটি দোকানে বসে থাকা আবুল কাশেমকে লক্ষ্য করে মোটরসাইকেলে আসা বেশ কয়েকজনের মধ্যে রাকিব হোসেন গুলি চালায়। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, রাকিব হোসেনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করায় তার বিরুদ্ধে শাহজাহানপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় তাকে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত বৃহস্পতিবার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিনি আরও জানান, আসামি খোরশেদকে আগের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তাকেও দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টার মূল পরিকল্পনাকারী সম্পর্কে আরও তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *