সিলেট অঞ্চলে ফের বন্যা পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা

নিউজ ডেস্ক:: মৌসুমি ভারী বর্ষণের কারণে সিলেটের নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টির সাথে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের বন্যার দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে। ইতোমধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, গতকাল বুধবার আবহাওয়া অফিসের ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কথা জানানো হয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় সিলেটসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। আর এই অতিভারী বর্ষণের কারণে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া, উজানে মৌসুমি ভারী বর্ষণের কারণে চলতি মাসের মধ্যভাগে সিলেটসহ দেশের অধিকাংশ স্থানে বন্যা দেখা দেবে। মাঝারি ধরনের এই বন্যা পরিস্থিতি এক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস গতকাল বুধবার ২৪ ঘন্টার আবহাওয়া বার্তায় জানায়, গত মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৬.৬ মিলিমিটার। পাশাপাশি গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ঘন্টায় ৬২মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশালীর অফিস সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের পাশে চেরাপুঞ্জিতে অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখানে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরের স্টেশনগুলোতে অতিভারী বর্ষণ রেকর্ড করা হয়েছে। এই বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বর্ষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটের সুরমার পানি কানাইঘাট, সিলেট ও সুনামগঞ্জে; কুশিয়ারার পানি শেরপুর-সিলেটে; সারিগোয়াইনের পানি সারিঘাটে; পুরাতন সুরমার পানি দিরাইয়ে; যাদুকাটার পানি লাউঢ়েরগড়ে; বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জ: কোম্পানীগঞ্জ, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার ঘরবাড়িসহ অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্কুল-কলেজ পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলা সদরের কয়েকটি রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদের মাঠে হাঁটু সমান পানি। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গো-খাদ্যের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। লোকজনও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সংযোগ সড়কসহ প্রধান সড়কগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জলাশয় ও পুকুরের মাছ বাণের পানিতে ভেসে গেছে। দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জ, উৎমা ও শাহ্ আরফিন টিলায় পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। ফলে কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল বুধবার অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল হক জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও প্রবল বর্ষণের কারণে অনেক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে। এজন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুলগুলোর পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন জানান, ৩০০ হেক্টর আউস ও ১০ হেক্টর শাক-শবজি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আনিছুর রহমান জানান, উপজেলার বেশ কয়েকটি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।

কোম্পানীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদ রানা জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বন্যার্ত অসহায় ও গরীব লোকদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।

তবে গোয়াইনঘাট বন্যা দেখা দিয়েছে। অব্যাহত রয়েছে পানি বৃদ্ধি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বন্যায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পিয়াইন, সারী, গোয়াইনসহ সবকটি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করছে।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি অবনতি থাকায় জাফলং-বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারীতে সব ধরণের পাথরবালি উত্তোলন বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক খেটে খাওয়া মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। সারী-গোয়াইন, সালুটিকর-গোয়াইনঘাট, হাদার পার-বঙ্গবীর -গোয়াইনঘাট, গোয়াইনঘাট-রাধানগর জাফলং সড়কের উপর দিয়ে হাঁটু ও কোমর পানি বইছে। উপজেলার সবকটি সড়ক পানিবন্দি থাকায় উপজেলা সদর ও জেলা শহর সিলেটের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। নৌকা ছাড়া কোন যানবাহন চলছেনা এসব এলাকায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার এম আনিছুজ্জামান জানান, ৪ হাজার হেক্টর রোপায়িত আউশ ধানের মধ্যে চলমান বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে ১ হাজার হেক্টর আউশক্ষেত। পানিবন্দি থাকায় উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নের বিদ্যালয়ে ছাত্র/ছাত্রী উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অনেক স্কুল বন্ধও রয়েছে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাটের প্রায় সবকটি এলাকায় আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সবকটি এলাকাই সার্বক্ষণিক যোগোযোগ রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯টন চাল, শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আরও ত্রাণ এর জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্র পাঠানো হয়েছে। উপজেলার বন্যায় বিপদগ্রস্থ মানুষজনকে উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরধারী রয়েছে। গোয়াইনঘাটের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী জানান,আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় গোয়াইনঘাটের ৯টি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষজন চরম অমানবিক জীবন যাপন করছে। সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার্তদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের তরফে ত্রাণ বিতরণ করেছি।

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ জেলা অবিরাম রবর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের সরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জ শহরের নিম্নে ঞ্চলের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে ৭ দশমিক ৯৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপদ সীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভূইয়া জানান, বুধবার সকাল ৬ টায় গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে গড় বৃষ্টিপাত ১০৫ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ ও তথ্য কর্মকর্তা ড. হযরত আলী জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৮ হেক্টর আউশ ধান ও দোয়ারা বাজার উপজেলায় ২ শত হেক্টর আউশ ধানের জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। যেটুকু ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ২/৩ দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির খবর নেওয়া হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পৌর সভার মেয়র নাদের বখত জানান, উত্তর আরপিননগর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকেছে। এছাড়াও শহরের নদীর পাড়ের গ্রামগুলোর নিম্নেঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

দোয়ারাবাজার: দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ), দোয়ারাবাজারে গত তিন দিনের টানা বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উঠতি আউশ-ইরি ফসল, আমনের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়াসহ গো-খাদ্য সংকটের আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার অনেক কম। সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, খাসিয়ামারা, ধূমখালী ও ছাগলচোরাসহ উপজেলার সকল নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা, বগুলা, লক্ষিপুর, নরসিংপুর, দোয়ারা সদর ছাড়াও বাকি চার ইউনিয়নের নিম্নেঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চিলাই নদী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিব্বির আকন্দ (সাব্বির) জানান, গত জুনের মধ্যভাগে প্রথম দফা টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বগুলা ইউনিয়নের চিলাই নদীর উজানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে আবারো পানি প্রবেশ করায় বিভিন্ন হাওরের শতাধিক একর আউশ-ইরি ফসল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলা সদরের সড়কের বিভিন্ন স্থান এবং ছাতক- সুনামগঞ্জ সড়কের মান্নারগাঁও ইউনিয়নস্থ কাটাখালী বাজার এলাকায় বিভিন্ন অংশ তলিয়ে গেছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার, শরিফপুর-মহব্বতপুর-বগুলাবাজারসহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে গেলে একমাত্র নৌপথ ছাড়া উপজেলা সদরের সাথে ৯ ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে তিনি জানান। তবে এ পর্যন্ত কোথাও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও বন্যা মোকাবেলায় আমরা সারাক্ষণ প্রস্তুত রয়েছি।

ছাতক: ছাতক(সুনামগঞ্জ) , ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ছাতক উপজেলার নিম্নেঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পানিবন্দি মানুষের জন্য কোন আশ্রয় কেন্দ্র খোলার খবর এখনও পাওয়া যায়নি। ৫-৬দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। গ্রামীন রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়ে পড়েছে বিচ্ছিন্ন। এ ছাড়া ছাতক সদর, কালারুকা, চরমহল্লা, দোলারবাজার, ভাতগাঁও, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, সিংচাপইড়, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নসহ পৌরসভার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার, চেলা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ও পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় নৌ-পথে ছোট-ছোট ফেরী নৌকা চলাচল প্রায় বন্ধ গেছে। প্রবল বর্ষণে সুরমা, পিয়াইন ও চেলা নদীতে পাথর ও বালুবাহী বার্জ-কার্গো ও বাল্কহেড নৌকায় লোডিং-আনলোডিং বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পাথর শ্রমিক। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দু’য়েক দিনের মধ্যেই ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক তলিয়ে গিয়ে সারা দেশের সাথে ছাতকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *