বন্দিশালায় আটকে রেখে কিশোরীকে পাশবিক নির্যাতন

নিউজ ডেস্ক:: বানিয়াচংয়ে এক ভিখারীনির অপ্রাপ্ত বয়স্ক সুন্দরী কন্যাকে কৌশলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পাশবিক নির্যাতন করেছে এক লম্পট। তালাবন্ধ ঘরে বন্দি রেখে টানা দুই সপ্তাহ কিশোরীকে পাশবিক নির্যাতন করে দত্তপাড়া মহল্লার বিনদ সরকারের ছেলে অরুন সরকার (৩৫)।

অবশেষে গত মঙ্গলবার বিকালে অরুনের এক বন্ধুর সহযোগিতায় বন্দিদশা থেকে গোপনে পালিয়ে আসে কিশোরী।

কিশোরীর মা ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় সমাজপতির দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। মঙ্গলবার সরজজিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, কিশোরীর মা স্বামী পরিত্যক্ত, তিনি কোনো সময় গৃহকর্মী ও কখনও ভিক্ষা করে ওই কিশোরীকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

ওই কিশোরী জানায়,বুরুজপাড়ার সুমন নাম পরিচয় ব্যবহার করে তার সাথে মোবাইলফোনে পরিচয় গড়ে তোলে অরুণ সরকার। কিছুদিন ফোনে কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। অরুনের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ১১ জুন সন্ধ্যার দিকে বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে দেখা করতে যায় কিশোরী। তখন দেখে দত্তপাড়ার অরণ সরকার দাঁড়িয়ে আছে। তার সাথে ছিলেন অরুনের বন্ধু একই গ্রামের অভিনাশ সরকার। এসময় কিশোরী মুখ ফিরিয়ে চলে যেতে চাইলে অরুন ও তার বন্ধু অভিনাশ কিশোরীকে ফুসলিয়ে ইজিবাইকে তুলে নিয়ে এক মুসলিম বাড়িতে রাত্রিযাপন করে।

কয়েকদিন হবিগঞ্জ শহরের এক বাসায় থাকার পর অরুন তার বাড়িতে নিয়ে আসে। তালাবন্ধ ঘরে কিশোরীকে আটকে রাখে। কারণে-অকারণে পাশবিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। অরুনের বাড়িতে নিয়ে আসার পর কিশোরী দেখে তার আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। মঙ্গলবার অরুনের বন্ধু অভিনাশের সহায়তায় বন্দিদশা থেকে পোপনে পালিয়ে আসে কিশোরী। তার শরীরে নির্যাতনের চিহৃ রয়েছে। ওই দিন বিকালে হাসপাতালের চিকিৎসা নেয় ওই কিশোরী। তবে অর্থের অভাবে ঠিকমত তার চিকিৎসা করতে পারছেন না ভিখারীনি মা।

তিনি জানান, মেয়েকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেলেও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আইনের আশ্রয় নেননি। মেয়েকে নির্যাতনের বিচার চেয়ে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়ার কাছে গিয়ে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে নির্যাতনের কথা বললে ধনমিয়া চেয়ারম্যান থানা পুলিশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে, বুধবার দুপুরে কিশোরীর মা বিরজা সরকার অরুন সরকারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বানিয়াচং থানার ডিউটি অফিসার এসআই কাকন দাশ জানান, এ প্রসঙ্গে অরুন সরকারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অরুন সরকারের যোগাযোগ করলে তিনি ভিন্ন কথা বলেন, জোর করে নয়, প্রেমের টানে এসেছে। পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কিশোরীকে বিয়ে করেছেন। ইউপি সদস্যসহ পাড়ার মরুব্বিরা বিয়ে পড়ানোর সময় উপস্থিত ছিলেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *