পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন আইনজীবী নেতারা

নিউজ ডেস্ক:: আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ও আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

লিখিত বক্তব্যে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিমকোর্ট বারের বর্তমান সদস্য ৯ হাজার ৯২ জন। বার কাউন্সিল নির্বাচনে সুপ্রিমকোর্ট বারে ভোটার করা হয়েছে মাত্র ৮৫৩ জনকে। বিগত নির্বাচনে শত শত আইনজীবী এ কেন্দ্রে ভোট দিলেও এবারের নির্বাচনে তাদের অনুমতি বা অনুরোধ ছাড়াই ভোটার তালিকা জেলা বারের ভোটকেন্দ্রে স্থানান্তর করে। এ কারণে এ ভোটকেন্দ্রে তারা ভোট দিতে পারেননি। এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা। তাদের ভোট ঢাকা বারসহ বিভিন্ন নিম্ন আদালতের ভোটকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে।

খোকন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পরিচপত্র/পাসপোর্ট অথবা সংশ্লিষ্ট বারের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দেয়ার বিধান আছে। বিশেষ করে ঢাকা বারে কোনও ধরনের পরিচয়পত্র না দেখিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। যার ফলে প্রকৃত আইনজীবীরা ভোট দেয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এবং অন্যদিকে আইনজীবী নন এমন অনেকে ভোট দিয়েছেন।

মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিধান থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনের দিন প্রত্যেক প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টকে রেজাল্ট শিট দেয়া হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেআইনি বটে। ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়ার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে দুর্নীতি তদন্ত করে দায়ী ও জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। এই নজিরবিহীন দুর্নীতির জন্য বার কাউন্সিল নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করছি।

এদিকে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন ডেকে আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও বার কাউন্সিলের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান শ ম রেজাউল করিম বলেন, বার কাউন্সিল নির্বাচনে ভয়াবহ পরাজয়ের গ্লানি থেকে বাঁচতে আমাদের প্রতিপক্ষ অনাহুতভাবে একটি ধূম্রজাল তৈরি করতে অসত্য ভিত্তিহীন কথা বলছে। নির্বাচনে কোনও অনিয়ম হয়নি।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, কাউন্সিলের একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে, একাধিক বারে ভোট দেয়ার প্রবণতা রোধ করতে কেবল একটা বারে ভোট দিতে পারবে। সে জন্য সব বারে এবং পত্রিকায় নোটিশ দিয়ে বলা হয়েছে কোন বারে ভোট দেবেন অপশন দেন। অপশন না দিলে মূল বারে তিনি ভোট দেবেন। সে সিদ্ধান্তের আলোকে যারা অপশন দিয়েছেন তারা অপশনের বারে রয়েছেন। যারা অপশন দেননি তারা তাদের মূল বারে ভোটার হিসেবে এসেছেন। এ ক্ষেত্রে আইনের কোনও ব্যত্যয় ঘটেনি এবং বার ‍কাউন্সিলের এটা সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত, যে কাউন্সিল সভায় সদস্য হিসেবে মাহবুব উদ্দিন খোকনও ছিলেন।

তিনি বলেন, এটা সর্বৈব অসত্য। কারণ প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন জুডিশিয়াল অফিসাররা। বিচারকদের বিরুদ্ধে এ জাতীয় অভিযোগ আনা দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক। সব কিছুকে রাজনৈতিকীকরণ কোনোভাবে যুক্তিসঙ্গত নয়।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, কোনও অনিয়ম হয়নি। বিভিন্ন বার থেকে রেজাল্ট এসে ঢাকায় গণনা হওয়ার আগে প্রেস কনফারেন্স করার মধ্য দিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তারা কি অগ্রিমই জানতে পেরেছেন তারা হেরে যাবেনই। না হলে রেজাল্ট হওয়ার পরে প্রতিকারের জন্য ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। সেখানে তাদের কোনও কথা থাকলে বলতে পারত।

গত ১৪ মে সারা দেশে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে সরকার সমর্থক সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ১৪টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনে জয়লাভ করে। বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা দুটি আসনে জয়ী হন। সারা দেশের সব কেন্দ্রের রেজাল্ট শিট আসার পর কেন্দ্রীয়ভাবে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করবেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *