ভুয়া সনদ দেখার দায়িত্ব কার?

নিজস্ব প্রতিবেদক :: শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর। একটি জাতির উন্নতি, অগ্রগতি ও সাফল্য নির্ভর করে সেই জাতির শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে একটি জাতি তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। আমরা জাপান, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা কিংবা ইংল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে তাকালে বুঝতে পারি তারা শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে আমাদের থেকে কতটা এগিয়ে আছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে তারা শিক্ষা ও শিক্ষককে সকলের উপরে স্থান দিয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমরা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি না। এক সময় মেধাবীরাই শিক্ষকতা পেশায় আসতেন কিন্তু সময়ের ব্যবধানে মেধাবীদের পাশাপাশি অনেক মেধাহীন, অযোগ্য ও ভূয়া সার্টিফিকেটধারীরাও শিক্ষকতা পেশায় এসে এ পেশাকে কলুষিত করছেন। মানুষ গড়ার কারিগররাই যদি ভূয়া ডিগ্রীধারী হয়ে থাকেন তবে সঠিক মানুষ গড়ে তোলা কি সম্ভব। যতই দিন যাচ্ছে ভূয়া ডিগ্রীধারী শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়ছে।

এসব অযোগ্য ও ভূয়া ডিগ্রীধারী শিক্ষকরা সরকারী,বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে চাকরী করার পাশাপাশি প্রাইভেট স্কুল – কলেজে বেশি নিয়োগ পাচ্ছেন। ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব ভূয়া ডিগ্রীধারীদের নিয়োগই হচ্ছে সবচেয়ে বড় আকারে। এসব অযোগ্য লোকগুলোর সনদ পরীক্ষা করে দেখার সময় নেই প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের। কারণ এসবে সময় কিংবা টাকা নষ্ট করার চিন্তা ভাবনা তাদের নেই। তাদের চিন্তা ভাবনা শুধুই মুনাফা নিয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সিলেটের বেশ কিছু স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন অনেকেই ভূয়া সনদ দিয়ে দিনের পর দিন চাকরী করেই যাচ্ছেন। এমন অনেক আছেন যাদের অফিস সহকারী হওয়ার যোগ্যতাও নেই তারাও কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে প্রভাষক হয়ে দিব্যি কর্মজীবন পার করে দিচ্ছেন। এই সমস্ত শিক্ষকদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করলে তারাও কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তাদের কাছে এসব শিক্ষকদের সনদ ভূয়া না আসল সেটার চেয়ে বড় কথা হল তারা প্রতিষ্ঠানের মুনাফার জন্য কতটা কাজ করছেন সেটার উপর। এমন অনেক শিক্ষক আছেন যারা ক্লাসে গিয়ে দুই লাইনও পড়াতে পারেন না তারাও প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জোরে প্রভাষক হয়ে যান।

এখন প্রশ্ন হল এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসব ভূয়া সনদধারী শিক্ষকদের সনদ যাচাই বাছাই করে দেখার কি কেউ নেই?

জেলা শিক্ষা অফিস কিংবা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কি এ ব্যাপারে কোন দায়িত্ব নেই। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে একদিন দেশ ভূয়া সনদধারীদের কাছে স্বর্গরাজ্য হয়ে যাবে। তাই এখনি এসবের লাগাম টেনে ধরতে হবে নতুবা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংশ হয়ে দেশ পিছিয়ে যাবে বহু বছর।

যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব ভূয়া সনদধারীরা কাজ করছেন সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা আরেকটু সচেতন ও আন্তরিক হলে ভূয়া সনদধারীরা নিয়োগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে। এতে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।

সিলেটের মেজরটিলায় অবস্থিত কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেখানেও এরকম ভূয়া ও অযোগ্য শিক্ষক থাকতে পারেন। সে ব্যাপারে কথা বলার কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ও শিক্ষ’কে ফোন দিলে ফোন ধরেননি। তাছাড়া কিছু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ফোন দিলে তারাও ফোন ধরেননি। ( বিস্তারিত আসছে………)

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *