একমাত্র নামাজই ফিরিয়ে দেয় মানসিক প্রশান্তি

ধর্ম ও দর্শন ডেস্ক:: প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করা ফরজ। তবে অনেকের মাঝেই এই ফরজ কাজটি করতে অনীহা দেখা যায়। কিন্তু নামাজ পড়ার যে কত সুফল তা জানলে হয়তোবা অনেকেই তাদের এই অনীহা কাটিয়ে উঠতে পারতেন।

ধরুন প্রতিদিন আপনি ৫ বার ২-৫ মিনিট করে হালকা ব্যায়াম করেন। তাহলে আপনি সুস্থ থাকবেন নাকি যে ব্যায়ামই করে না সে? অবশ্যই আপনি। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একজন মানুষ শারীরিকভাবে যেমন সুন্থ বোধ করে তেমন তার মনেও থাকে নিগূঢ় প্রশান্তি। চলুন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেই-

নামাজ যেভাবে প্রশান্তি আনে এবং আপনাকে সুস্থ রাখে
খুবই সাধারণভাবে দেখতে গেলে নামাজের সময় আমরা চার ধরনের ব্যায়াম করে থাকি যা আমাদের শারীরিক সুস্থতার সাথে সাথে মানসিক প্রশান্তিও বজায় রাখে। প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর দেয়া। তারপর রুকু, সিজদাহ এবং সিজদাহ থেকে উঠে হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনা করা।

তাকবীর
প্রথমেই সোজা হয়ে টান টান হয়ে দাঁড়িয়ে তাকবীর দিতে হয়। এর মাধ্যমে শরীরের অধিকাংশ অস্থিসন্ধির ব্যায়াম হয় যা আপনার ব্যাক পেইন প্রশমনে সাহায্য করে। এছাড়াও হাঁটুর ব্যথা, পায়ের গোড়ালি ও আঙ্গুলের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে নামাজের উপকারিতা রয়েছে।

রুকু
রুকু দেয়ার সময় সমস্ত শরীর টানটান থাকে যার মাধ্যমে পিঠের ব্যথা, নিতম্বের ব্যথা, হাঁটু, গোড়ালি এবং পায়ের আঙ্গুলের ব্যথা কমানো সম্ভব। সামনের দিকে একটু ঝুঁকে দুই হাত হাঁটুতে রেখে রুকু দেয়া হয়।

সিজদাহ
সিজদাহর সময় দুই হাঁটুর উপর ভর করে মাথা নামিয়ে সিজদাহ করা হয় যার কারণে আপনার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ কার্যকর থাকে। শরীরে বিভিন্ন অস্থিসন্ধি স্বাভাবিক রাখার সাথে সাথে হাতের কব্জি দুটিও মজবুত ও ব্যথামুক্ত রাখতে নামাজের উপকারিতা অনস্বীকার্য।

সিজদাহর পরে প্রার্থনা
সিজদাহ থেকে উঠে হাঁটুর উপরে বসে দুই হাত টানটান করে হাঁটুর উপর রাখতে হয়। এসময়ও আপনার শরীরের প্রত্যেকটি পেশী সচল হয়ে ওঠে।

নামাজের অন্যান্য উপকারিতা
ক. কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হৃদরোগসহ হার্টের যেকোনো রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।

খ. শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

গ. সিজদাহ-তে গেলে আমাদের মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় রক্ত সঞ্চালন হয় যা আমাদেরকে মানসিক স্বস্তি দেয়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং অন্য সকল মানসিক সমস্যা দূরে রাখে।

ঘ. হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে যার ফলে সমস্ত শরীর সতেজ থাকে এবং শরীর নতুন উদ্যম ফিরে পায়।

ঙ. মানুষের শরীরে কার্টিলেজ নামক এক ধরনের টিস্যু থাকে যার মধ্য দিয়ে রক্ত বা অন্য কোনো অ্যান্টিবডি যেতে পারে না। নিয়মিত নামাজ পড়লে এই টিস্যুগুলো বেড়ে উঠতে পারে না।

দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ এবং বেতরের নামাজ মিলিয়ে মোট ২০ রাকআত ফরজ ও ওয়াজিব নামাজ থাকে। তার মানে নিয়মিত শুধুমাত্র যে নামাজটুকু না পড়লেই নয় সেটুকু পড়লেই আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় ব্যায়াম হয়ে যায় এবং সাথে সাথে মানসিক প্রশান্তিও বজায় থাকে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *