মর্মান্তিক: শায়েস্তাগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা

নিউজ ডেক্স:: প্রেমের প্রস্তার প্রত্যাখান করায় স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্যক্ত করতো বখাটেরা। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে প্রাণ কোম্পানীতে চাকুরি নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি বিউটির শায়েস্তাগঞ্জের পুরাইকলা বাজার সংলগ্ন হাওর থেকে বিউটি আক্তার (১৬) নামের এক ধর্ষণের মামলার ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তবে তার পরিবারের অভিযোগ তাকে পুণরায় ধর্ষণের পর নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টায় শায়েস্তাগঞ্জ থানার এসআই জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

ওই কিশোরী ব্রাহ্মনডুরা দক্ষিণ হাটির সাঈদ মিয়ার কন্যা। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি আনিছুর রহমান জানান। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে হাওর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের শরীরে অসংখ্য ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে, এমনকি তার ভুড়িও বের হয়ে গেছে। নিহত কিশোরীর চাচা সফিক মিয়া জানান, বিউটি ব্রাক্ষণডুরা মোজাহের উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।

স্কুলে আসা যাওয়ার পথে তাকে প্রায়ই বিউটিকে উত্যক্ত করতো একই গ্রামের মলাই মিয়ার পুত্র বাবুল মিয়া (৩০)। বিষয়টি বিউটি তার পিতাকে জানালে এ নিয়ে সালিশ হয়। কিন্তু এরপরও বাবুল তাকে উত্যক্ত অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে বাবুল বিউটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বাবুল বিবাহিত ও তার সন্তান থাকায় বিউটির পরিবার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে। এতে বাবুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং স্কুলে আসা যাবার পথে উত্যক্ত করতেই থাকে। এক পর্যায়ে বিউটি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

এক বছর আগে বিউটি প্রাণ আরএফএল কোম্পানীতে কাজ নেয়। গত ১০ মার্চ রাত ৮টার দিকে প্রাণ কোম্পানীতে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে অলিপুর ও বিশাউড়ার মধ্যবর্তী স্থান থেকে বাবুলসহ একদল লম্পট তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে ফেলে যায়। এ ঘটনায় তার পিতা বাদি হয়ে হবিগঞ্জের নারী শিশু ও নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে বাবুলকে প্রধান আসামী করে মামলা করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে শায়েস্তগঞ্জ থানার ওসিকে রুজুসহ ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার পর বাবুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে বিউটির পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে। নিরূপায় হয়ে সাঈদ মিয়া বিউটিকে লাখাই উপজেলার গুণীপুর গ্রামে নানা ফয়জুর রহমানের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বিষয়টি জানতে পারে বাবুল সেখানেও গিয়েও তাকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করে।

এক পর্যায়ে গত শুক্রবার গভীর রাতে বিউটি প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হওয়ার পর তাকে খুজে পাওয়া যায়নি বলে জানান বিউটির চাচা। তিনি জানান, বিউটির নানার বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর সন্ধান না পেয়ে শনিবার সকালে ফোন করে বিষয়টি তাদেরকে জানালে তারাও বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা খবর পান উল্লেখিত স্থানে লাশ পড়ে আছে।

তিনি আরো জানান, তাদের ধারণা বাবুলই তার ভাতিজিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে। এদিকে, বিউটির মা বাবা কন্যার মৃত্যুতে বার বার মুর্চা যাচ্ছেন।

শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের জিম্মায় লাশ হস্তান্তর করা হয়। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে এটি হত্যাকান্ড। তবে অভিযোগের প্রেক্ষিতে লম্পটকে ধরতে অভিযান চলছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *