নিউজ ডেস্ক :: দুর্যোগকবলিত হওয়ায় সারা দেশে প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অচল হয়ে গেছে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি উভয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেড়েছে। তবে কলেজ পর্যায়ে মেয়েদের ঝরে পড়া কমেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০১৭ এর খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। খসড়া জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরেন ব্যানবেইসের পরিচালক মো. ফসিউল্লাহ। বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব মো. আলমগীর।
খসড়া পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, সারা দেশে ১০ ধরনের দুর্যোগে প্রায় ১৮ হাজার ৬৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ৬১৮টি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১৮ হাজার ২০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অন্যদিকে, মাধ্যমিক স্তরে ছেলেদের চাইতে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার বেশি। মাধ্যমিকে ২০১৭ সালে মেয়েদের ঝরে পড়ার হার ৪১ দশমিক ৫২ শতাংশ। সেখানে ছেলেদের ঝড়ে পড়ার হার ৩৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর ছেলে-মেয়ে উভয়ের ঝরে পড়ার হার ৩৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। ২০১৬ সালে মাধ্যমিকে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ঝরে পড়ার হার ছিল ৩৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। অপরদিকে কলেজ পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার কমে ১৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এ হার ছিল ২০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
জরিপে প্রক্ষেপণ করে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরে ২০২০ সালে ছেলে-মেয়ে উভয়ের ঝরে পড়ার হার হবে ৩৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২০২৫ সালে ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং ২০৩০ সালে এ হার ২০ দশমিক ১৭ শতাংশে দাঁড়াবে।
খসড়া পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার কমে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে ছিল ৮৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০১৭ সালে পাসের হার ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ হার ছিল ৭২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
সারা দেশে স্কুলপর্যায়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫১ হাজার ২১১ জন, কলেজ পর্যায়ে ৩ হাজার ৬৪৩ জন, মাদরাসা পর্যায়ে ৯ হাজার ৯৩৬ জন। এ তিন স্তরে বাকপ্রতিবন্ধী, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শ্রবণপ্রতিবন্ধীসহ মোট ২৮ হাজার ৩২৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে বলে ২০১৭ সালের জরিপে তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা জানার জন্য তথ্য ও সংখ্যা জানা দরকার। ব্যানবেইসের এ জরিপের মাধ্যমে তা ওঠে এসেছে। শুধু তাই নয় এ পরিসংখ্যানের মাধ্যমে পেছনের সব সমস্যা ওঠে এসেছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমাতে সারা দেশে ২ কোটি ৩ লাখ ছেলে-মেয়েকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে উপবৃত্তি। বিভিন্ন স্তরের প্রতিবন্ধীকেও বৃত্তি দেয়া হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে কিছুটা বির্তক রয়েছে। উন্নত দেশের দিক থেকে আমরা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি। মানের দিক থেকে আমরা আমেরিকা নাকি ইংল্যান্ডকে অনুসরণ করব তা নিয়েও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে আধুনিক চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে শিক্ষার মান নির্ধারণ করা হবে।