সিলাম রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জনতার উদ্ভব পরিস্থিতি নিয়ে বৃহত্তর সিলাম ইউনিয়নবাসির উদ্যোগে এক আলোচনাসভা ও পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সিলাম চকের বাজারস্থ শাহী ঈদগাহ ময়দানে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সাংবাদিক এম আহমদ আলীর সঞ্চালনায় ও মো. আব্দুল কাইয়ুম মাস্টারের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলামের বিশিষ্ট মুরব্বী ফজলু মিয়া। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে বক্তব্য রাখেন রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেলাল উদ্দিন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন-‘আমরা মামলা করতে আগ্রহী ছিলাম না। এলাকাবাসীর সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্য ছিলো আমাদের। কিন্তু আমাকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মামলা দায়ের করার জন্য চাপ দেন। আমি তখন বলেছিলাম-বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধান হবে। তখন তিনি আমাকে বলেন- মামলা দায়েরের পরও এটা করতে পারবেন। এছাড়া মোগলাবাজার থানার ওসি ফোন করেও আমাকে বার বার মামলা দায়েরের জন্য বলেন। তাই বাধ্য হয়ে আমি মামলা দায়ের করি। তবে মামলায় আমি কোনো আসামির না দেইনি। আসামিদের আমি চিনি না, পুলিশ-ই নিজে থেকে আসামিদের নাম দিয়েছে।
হেলাল উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন-‘আমি কখনো কোনো পত্রিকা বা সংবাদমাধ্যমে বলিনি যে; বিএনপি নেতা তাজুল আমার কাছে চাঁদা চেয়েছেন। এটা অতিরঞ্জিত করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। তাছাড়া ঘটনার দিন বিএনপি নেতা তাজুল আমাকে অনেকভাবে সহযোগিতা করেছেন। ফেরার পথে আমাকে নিরাপদে চন্ডিপুল পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর চাঁদা দাবির বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মুমিত চৌধুরী মঞ্জু’র প্রতিনিধি পুলিশের ইন্সপেক্টর অঞ্জন কুমার পাল সভায় বক্তব্যকালে বলেন-‘তিনি (মঞ্জু) অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি, তাঁর কাছের মানুষ হিসেবে আমাকে পাঠিয়েছেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একমত। এ রিসোর্টে কোনো অসামাজিক কাজ হতে পারে না। এতে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হবে। অসামাজিক কাজ যাতে আর না হয় সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নিবো।’ তিনি মোগলাবাজার থানার বর্তমান ওসির সমালোচনা করে বলেন-‘ওসি সাহেবের উচিৎ ছিলো ঘটনার পরদিনই এলাকার মানুষকে নিয়ে বৈঠক করে শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টির সমাধান করা। কিন্তু তিনি তা না করে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষকে বার বার মামলা করার জন্য চাপ দিয়েছেন। এটি অনুচিৎ। এদিকে, সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়-রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে অসামাজিক কার্যকলাপবিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। পরে সেখান থেকে একটি প্রতিনিধি দল মামলা প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে এসএমপি কমিশনারের কাছে যাবে এবং স্মারকলিপি প্রদান করবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সিলাম তথা দক্ষিণ সুরমার বিশিষ্ট মুরব্বী আব্দুস শহীদ মাস্টার, সার্জেন্ট অবসরপ্রাপ্ত আজিজুর রহমান গেদন, আনোয়ার হোসেন আনা মিয়া, মো. ফজলু মিয়া, নেছার আলী, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব হাজী তাজরুল ইসলাম তাজুল, রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেলাল উদ্দিন, রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মোমিত চৌধুরী মঞ্জু’র পক্ষে অবসরপ্রাপ্ত ওসি অঞ্জন কুমার পাল, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, ৫নং সিলাম ইউপি চেয়ারম্যান শাহ ওলিদুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম হোসেন বখত, সিলাম ইউপি ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর রহমান, ৯নং ওয়ার্ড সদস্য সাদিক মিয়া, ৩নং ওয়ার্ড সদস্য আমিরুল ইসলাম মাসুম, জামাল উদ্দিন, শাহিনুল কবির মাস্টার, বিশিষ্ট মুরব্বী শফিকুল ইসলাম, জেলা জাতীয়পার্টি নেতা আহসান হাবিব মঈন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা জামায়াতের সভাপতি সাব্বির আহমদ, ছাত্রশিবির সাবেক নেতা মাহবুব বখত, শিক্ষানবিস আইনজীবী নুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট মুরব্বী আব্দুর রহমান নুনু সহ সিলাম ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও সামাজিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের সহস্রাধিক জনতা উপস্থিত ছিলেন।