বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার (১৭ মে) বিকেল ৫টায় সিলেটের কোর্ট পয়েন্টে বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট বিভাগীয় কমিটির আহবায়ক মো. ছাদেক মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক বদরুল আজাদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রমিকনেতা তফাজ্জল হোসেন।
বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী  পটু, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও সুনামগঞ্জ জেলা হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লিলু মিয়া, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং চট্ট: ২৩০৫) সভাপতি তারেশ চন্দ্র বিশ্বাস, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন।
বক্তারা বলেন, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ধারাবাহিক আন্দোলন ও দাবি আদায়ের অগ্রযাত্রায় মালিকশ্রেণি বরাবরের মতো নানারকম ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের জাল বিস্তারের অপচেষ্ঠায় লিপ্ত হয়। প্রতি বছরই মে দিবসের ছুটির আন্দোলনের সময় মালিকশ্রেণি ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মাধ্যমে মামলা হামলার মাধ্যমে শ্রমিক আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্থ করায় প্রয়াস চালায়। শ্রমিকদের অব্যাহত আন্দোলনের চাপে মালিকশ্রেণিও শ্রমিকদের মে দিবসে ছুটির দাবিকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়ে কৌশলী ভূমিকা গ্রহণ করে। তারই ধারাবহিকতায় গত  ১মে সিলেট রে¯েঁÍারা মালিক সমিতি অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নামে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গুটিকয়েক রেস্টুরেন্ট খোলা রাখে এবং তা ভাংচুর করে সংগঠনের নেতৃবৃন্েদর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মালিকগোষ্ঠী সংগঠনের মধ্যে দালাল সৃষ্টি, ভয়-ভীতি দেখানো, প্রাণ নাশের হুমকি, হামলা-মামলা সহ দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত মোকাবেলা করে শ্রমিরা যখন তাদের দাবি আদায়ে সচেষ্ট। হোটেল মালিক পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ভাংচুরের দিন মালিক ভাংচুরকারীরা কেউই হোটেল শ্রমিক নয় মর্মে লাইভ চলাকালীন স্বীকার করলেও দায়েরকৃত মামলায় ৪জন শ্রমিককে তাদের নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়। আজকেও দক্ষিণ সুরমায় অবস্থিত আপন রেস্টুরেন্টের নিরীহ শ্রমিকদের উপর মালিকরা নির্মম নির্যাতন করে এবং মিথ্যা মামলায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় সমাবেশে নেতৃবৃন্দ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন।
বক্তারা আরো বলেন, হোটেল শিল্পে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শ্রম মানদন্ডসহ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ ও শ্রম বিধিমালা-২০১৫ কার্যকর করার ক্ষেত্রে  এ শিল্পের মালিকরা দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। শ্রম আইনে নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক থাকলেও এ শিল্পের সাথে সম্পর্কিত প্রায় ৩০-৩৫ লাখ কর্মরত শ্রমিককে তা প্রদান না করেই বছরের পর বছর কাজ করানো হচ্ছে। শ্রম আইনে উল্লেখিত নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা, অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ মজুরি, সাপ্তাহিক ও বাৎসরিক ছুটি এবং উৎসব বোনাসসহ আইনস্বীকৃত কোন অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয় না। বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে নিম্নতম মজুরি নির্ধানণ, শ্রমআইন বাস্তবায়ন সহ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *