কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে”২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভা

“পুলিশ মেমোরিয়াল ডে- ২০২৪” “কর্তব্যের তরে করে গেলে যারা আত্মবলিদান, প্রতিক্ষণে স্মরি, রাখিব ধরি, তোমাদের সম্মান”
কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে”২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভা।
অদ্য ০৯/০৩/২০২৪খ্রিঃ তারিখে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে”২০২৪ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিলেটের যে সকল গর্বিত পুলিশ সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিহত হয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে সিলেট বিভাগের সকল পুলিশ ইউনিটের সমন্বিত উদ্যোগে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে” আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের শহিদ বেদীতে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরবর্তীতে সকাল ১১:০০ ঘটিকার সময় শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা এসপি এম. শামসুল হক মিলনায়তানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। সিলেট জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জনাব মোঃ শফিকুর রহমান চৌধুরী মহোদয়। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মান্যবর পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ জাকির হোসেন খান, পিপিএম, মহোদয়। তিনি কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে”২০২৪ উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন আমাদের কাজের ধরণ ও চাকরীর প্যাটার্নের কারণে আমরা অনেক সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকি। এই কাজ করতে গিয়ে আমাদের পুলিশ সদস্যরা মারা যান। তাই প্রতি বছর তাদের এই ত্যাগের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য, সমবেদনা দেখানোর জন্য আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকি। আজকে উপস্থিত পুলিশ পরিবারের ২ জন সদস্যের কাছ থেকে তাদের পরিবারের অনুভূতি সম্পর্কে জানতে পারি। এই জেলাতে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিগত সময়ে ৭ জন পুলিশ সদস্য মারা গিয়েছেন। তাদের স্মরণে এই অনুষ্ঠান। যেই পরিবারের সদস্য মারা যায়, তারাই এই বিষয়টা বেশি অনুভব করতে পারেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনযোগ্য ব্যক্তি যখন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়; তখন আমরা যতই স্বান্ত্বনা দেই, অর্থনৈতিক সাহায্য বা অন্যান্য সরকারি অনুধান ও সুবিধা প্রদান করি সেটা পূরন হওয়ার নয়। তারপরও আমরা যারা ধর্মে বিশ্বাস করি, আমাদের এটা মানতে হবে একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে। আমাদের যে ৭ জন পুলিশ সদস্য শহিদ হয়েছেন আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশ পুলিশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন-২০৪১ নাগাত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ঐক্যবদ্ধ। এবছর পুলিশ সপ্তাহে আমাদের শ্লোগান ছিল, “স্মার্ট পুলিশ, স্মার্ট দেশ, শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ”। এই শব্দটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর খুব পছন্দ হয়েছে। তাই বাংলাদেশ পুলিশের উদ্দেশ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট দেশ রুপান্তর করার যে ভিশন-২০৪১ সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচী নিচ্ছি। এছাড়া উপস্থিত সাংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন বাংলাদেশ পুলিশ যাতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের অংশ হতে পারে আপনাদের যার যার অবস্থান থেকে আপনাদের ফোরামে আমাদের কথা তুলে ধরবেন। এই আশাবাদ ব্যক্ত করে, যাদের জন্য আজকের সভার আয়োজন করা হয়েছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য সিলেট-০১, সভাপতি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জনাব ড. এ কে আবদুল মোমেন, মাননীয় সংসদ সদস্য সিলেট-০৪, সভাপতি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জনাব ইমরান আহমদ, মাননীয় সংসদ সদস্য সিলেট-০৫, সভাপতি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জনাব মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী, মাননীয় সংসদ সদস্য সিলেট-০৩, জনাব হাবিবুর রহমান হাবিব, মাননীয় মেয়র, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, জনাব আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, মাননীয় সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩৯, ও সদস্য, ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব রুমা চক্রবর্তী, সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, জনাব আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি জনাব শাহ মিজান শাফিউর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) জনাব মোঃ জোবায়েদুর রহমান, পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) জনাব তোফায়েল আহমেদ, সিলেট জেলা প্রশাসক, জনাব শেখ রাসেল হাসান, চেয়ারম্যান জেলা পরিষদ সিলেট, জনাব এ্যাডভোকেট নাসির উদ্দীন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মাসুক উদ্দিন আহমদ, সভাপতি, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ, অধ্যাপক জাকির হোসেন, সাধারন সম্পাদক, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ, সাবেক কমান্ডার, সিলেট জেলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল সহ আরো উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। প্রধান অতিথিসহ বিশেষ অতিথিবৃন্দ নিহত পুলিশ সদস্য ১। এসআই (নিঃ)/নূর মোহাম্মদ শিকদার, ২। এসআই (নিঃ)/সমরুল ইসলাম, ৩। এসআই (নিঃ)/মোঃ ইসমাইল আলী, ৪। কনস্টেবল/ মোঃ বদরুল, ৫। কনস্টেবল/ এমরান হোসেইন, ৬। কনস্টেবল/চম্পক রঞ্জন দাস, ৭। কনস্টেবল/ মোঃ ফয়ছল আহমদ এর পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। এসময় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যগণ বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণ করেন এবং বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেফতারসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যগণ পেশাদারিত্বের সাথে, অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে আসছেন। যেকোন জাতীয় দুর্যোগে পুলিশ বাহিণীর সদস্যগণের চরম ধৈর্য্য, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কার্যক্রম সকল মহলে প্রশংসিত হয়। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে প্রতি বছর অনেক পুলিশ সদস্য নিহত হয়ে থাকেন। দায়িত্ব পালনকালে তারা আত্মত্যাগের যে মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তা গোটা পুলিশ বাহিনীকে গৌরবান্বিত করে। সমগ্র বাংলাদেশে নিহত পুলিশ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *