ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে নিজেদের স্বার্থে বলেছে: কাদের

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: বাংলাদেশ ইস্যুতে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে দিল্লির কূটনৈতিক বার্তা নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক রাজনীতিতে এই ভূখণ্ডে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। তাই ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে তারা তাদের স্বার্থে বলেছে।

আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে রাজধানীর ধানমন্ডি রবীন্দ্রসরোবরে শনিবার ডেঙ্গু সচেতনতা কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের মনে করেন, বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের বার্তা দেওয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয়।

বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লির কূটনৈতিক বার্তা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যারা ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন, তাহলে একাত্তর সালে কী হয়েছিল? ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল।’

তিনি বলেন, ‘তাদের (ভারত) সৈন্যরা রক্ত দিয়েছেন, আমাদের লোকজনদের-শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, প্রশিক্ষণ দিয়েছে; সেটা কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নয়?’

মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। পঁচাত্তরে আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি। তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়নি! ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতা থেকে চলে গেছি। জনগণ চায়নি, আমরা সরে গেছি। সেটাই বলবো এক কথায়। ষড়যন্ত্রের বিষয় তো আছেই। কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারটা ভারত বা কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাবে, কাউকে ক্ষমতাচ্যুত করবে এ নিয়ে আমার মনে হয় গণতন্ত্রে যারা বিশ্বাস করে তাদের এ মন্তব্য করা অশোভন।’

তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ভূ-খণ্ড গিয়ে জিয়াউর রহমান সাহেব মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন, সেটা কার হস্তক্ষেপ? অভিন্ন ইস্যু; আজকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারত আর আমেরিকার এই ভূ-খণ্ডে অভিন্ন স্বার্থ আছে। অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে তারা একে অন্যকে এই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে পারে। এটা তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে, নির্বাচনের ব্যাপারে। এ পর্যন্ত ভারত একবারও বলেনি যে, তারা আমাদের এখানে অমুককে চায়-অমুককে চায় না। এ ধরনের কোনো মন্তব্য আমরা ভারত থেকে পাইনি। আর আমরাও জানি, আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি তাকিয়ে আছে আমেরিকার দিকে। কখন নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি দেবে তার আশায়। তাকাতে তাকাতে চোখের পাওয়ার কমে গেছে। এখন আর কিছু দেখতে পায় না। আর আওয়ামী লীগ তাকিয়ে আছে দেশের জনগণের দিকে। উন্নয়ন–অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে যে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দেশের জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবে।

আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না-বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের পালানোর ইতিহাস নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ২০ বছরের দণ্ডিত আসামি। তিনি কাপুরুষোচিত রাজনীতি করছেন। তাই তার নেতৃত্বে কোনো আন্দোলনে সফল হবে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি জামাল উদ্দিন প্রমুখ।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *