কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ী সাইফুল হত্যার কারণ জানাল র‌্যাব

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পোশাক ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামকে দুদিন আগে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয় মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়ে খুন হয়েছেন সাইফুল।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় গ্রেফতাররা হলেন- মো. রাজন হোসেন (৩১), মো. জানে আলম (৩৬), মো. সুমন ওরফে গর্দা সুমন (২৫), মো. লিটন হোসেন (২৬), মো. দিপু (২৩), মো. সরোয়ার আকন্দ (২৬) ও মো. সজীব (২৯)। সোমবার ঢাকার শাহবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গত রোববার রাতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে এবং চোখ উপড়ে ব্যবসায়ী সাইফুলকে হত্যা করা হয়। তিনি থাকতেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের খেজুরবাগ সাতপাখি এলাকায়।

ওই ঘটনায় তার বড় বোন কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সোমবার রাতে অভিযানে নেমে র‌্যাব-১০ ও গোয়েন্দা শাখা সাতজনকে গ্রেফতার করে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাইফুল দীর্ঘদিন ধরে সাতপাখি রোডে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে পোশাকের ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহায়তা করতেন। এ কারণে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও অন্যান্য অপরাধীরা সাইফুলের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

রাজন এ বছরের ২৮ জুন একটি গাড়ি চুরির মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। রাজনের সন্দেহ তার এই গ্রেফতারের পেছনে সাইফুলের হাত রয়েছে। এ ছাড়া জানে আলম ও সুমন ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়। এর পেছনেও সাইফুলের হাত রয়েছে বলে তাদের ধারণা ছিল।’

তিনি আরও বলেন, রাজন গত ১৯ জুলাই জামিনে মুক্তি পায়। এর পর জানে আলম, সুমন ও অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে সাইফুলকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। তারা জানতে পারে, সাইফুল বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এ জন্য তাড়াহুড়া করে রাজনের নেতৃত্বে জানে আলম, সুমন, লিটন, দিপু, সরোয়ার ও সজীবসহ ১০-১২ জনের একটি দল তাকে হত্যা করে।

যেভাবে খুন সাইফুল

র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, ঘটনার দিন দোকান থেকে বাসায় ফিরছিলেন সাইফুল। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকেই খেজুরবাগ স্কুল রোডে ওঁৎ পেতে ছিল খুনিরা।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে খেজুরবাগ স্কুল রোডে এসে পৌঁছালে সাইফুলের পথরোধ করে তাকে ক্রিকেট খেলার ব্যাট, লোহার রড ও অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। একপর্যায়ে সাইফুল মাটিতে পড়ে গেলে রাজন পাশের একটি দোকান থেকে চামচ নিয়ে এসে চোখ উপড়ে ফেলে।

এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে সাইফুলকে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেফতার রাজন স্থানীয় একটি রিকশা গ্যারেজ পরিচালনা করে। পাশাপাশি এলাকায় মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও চুরিসহ পাঁচটির বেশি মামলা রয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *