ইরান সরকারের সমালোচনা: নিজ দেশে নিষিদ্ধ ‘এশিয়ার ম্যারাডোনা’

স্পোর্টস ডেস্ক : এশিয়ার খেলোয়াড়দের মধ্যে বর্তমানে যারা ইউরোপিয়ান ফুটবলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের অন্যতম ইরানের ফুটবলার আলি কারিমি। বায়ার্ন মিউনিখ, শালকে জিরো ফোরের মতো খ্যাতনামা ক্লাবে দ্যুতি ছড়িয়ে ‘এশিয়ার ম্যারাডোনা’ তকমা পেয়েছিলেন এই খেলোয়াড়। দেশের জন্য বয়ে এনেছিলেন সুনাম। সেই আলি কারিমি এবার সরকারের সমালোচনা করে ফিরতে পারছেন না নিজ দেশ ইরানে।

২০২২ সালে ‘হিজাব কাণ্ডে’ পুলিশি হামলায় ২২ বছর বয়সি নারী মাহশা আমিনির মৃত্যুতে ইরানে সামাজিকমাধ্যমে প্রতিবাদ শুরু হয়। সেই প্রতিবাদই পরে সহিংসতায় রূপ নেয়। ইরানজুড়ে পুলিশের গুলিতে হতাহত হয় অনেক সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদী মনোভাব ছড়িয়ে পড়ে ইরানের ফুটবল অঙ্গনেও।

কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নেমে জাতীয় সংগীত না গেয়ে মৌন প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ইরানের ফুটবলাররা। সংবাদ সংস্থা বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সেই সময় ইরানি সেলিব্রিটিদের মধ্যে প্রথম সরকারের বিরুদ্ধাচরণ এবং সমালোচনা করেছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত আলি কারিমি। এর পর আর নিজ দেশ ইরানে ফিরতে পারেননি তিনি। এমনকি আলি কারিমির পরিবারের সদস্যদেরও ইরানে যেতে দিচ্ছে না দেশটির সরকার। বিবিসি জানিয়েছে, আলি কারিমির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রমাণস্বরূপ কিছু কাগজপত্র তাদের হাতে পড়েছে।

বিবিসির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আলি কারিমিকে ৯ বার ইরানে ফেরার আমন্ত্রণ জানান বিবিসির স্থানীয় প্রতিনিধি। প্রত্যেকবারই কিংবদন্তি ফুটবলার কড়া হুমকি পেয়েছেন।’

তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিবিসি জানিয়েছে, সরকার কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত নিজের বাড়িটি বিক্রির চেষ্টা করছেন আলি কারিমি। লাভাসান শহরে অবস্থিত আলি কারিমির বাড়িটির বর্তমান বাজারমূল্য ২০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায়, যা ২০০ কোটি টাকারও বেশি।

২০১৪ সালে ফুটবলকে বিদায় জানানো আলি কারিমি পেশাগত ক্যারিয়ার শুরু করেন তেহরানের দল ফাতহ’র হয়ে। ২০০৫ সালে জার্মান বুন্দেসলিগার দল বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন তিনি। ২০০৫-০৬ মৌসুমে বাভারিয়ানদের লীগ শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন এই মিডফিল্ডার। দুই বছরে বায়ার্নের হয়ে ৩৩ ম্যাচে ৩ গোল করেন আলি কারিমি। ২০১১ সালে জার্মানির আরেক ক্লাব শালকে জিরো ফোরে যোগ দেন তিনি। ক্যারিয়ারের শেষে ইরানেই ফেরেন আলি কারিমি। এশিয়ার ম্যারাডোনার শেষ ক্লাবের নাম ট্র্যাক্টর সাজি। দলটির হয়ে ২৬ ম্যাচে ৫ গোল করেছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ইরানের হয়ে ১২৭ ম্যাচে ৩৮ গোল করেছিলেন আলি কারিমি।

সূত্র: আরব নিউজ

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *