সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক:পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেফতার। তবু দলনেতা ছাড়াই পুরো পাকিস্তানে বিক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন পিটিআই-এর নেতাকর্মী-সমর্থকরা। ইমরান খানের পূর্বনির্দেশনা অনুযায়ী চরম এ দুঃসময়ে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারই তৈরি করে যাওয়া ‘জরুরি কমিটি’র ছয় সদস্য। এরপর কী হবে, সেই ঘোষণাও তারাই করবেন। কমিটিতে রয়েছেন পিটিআই নেতা সাইফুল্লাহ নিয়াজি, আজম স্বাতি, ইজাজ চৌধুরী, মুরাদ সাইদ, আলী আমিন ও কুরেশি। ডন।
মঙ্গলবার ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর ফুঁসে উঠেছে পাকিস্তান। রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয়েছে পিটিআই কর্মীদের বিক্ষোভ। ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, লাহোর, করাচি, গুজরানওয়ালা, ফয়সালাবাদ, মুলতান, পেশোয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে এসব বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়। পুলিশের সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষও শুরু হয়েছে।
পিটিআই কর্মীরা খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে প্রাদেশিক পার্টির সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইকবালের নেতৃত্বে লাকি মারওয়াত জেলার রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে সিন্ধু হাইওয়ে বন্ধ করে দেন। কোয়েটা ক্যান্টনম্যান্টের ক্যাম্পের বাইরেও জড়ো হচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। আসকারি চেকপোস্টের কাছে তাদের জড়ো হতে দেখা যায়। করাচিতে পিটিআই এমএনএ এবং এমপিএ-এর সদস্যরা রাস্তা অবরোধ করার পর শারা ফয়সালের দুটি লেন অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
পুরোনো সবজি মান্ডি, বেনারস চক ও আল-আসিফ স্কয়ারের কাছে প্রধান ইউনিভার্সিটি রোডেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে লাহোরে সিনেটর এজাজ চৌধুরীর নেতৃত্বে পিটিআই সমর্থকরা লিবার্টি চকে জড়ো হয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা ডন ডটকমের প্রতিবেদক জানান, দলের কর্মীরা আকবর চক, পেকো রোড, মেইন ক্যানাল রোড এবং ফয়সাল টাউনও বন্ধ করে দিয়েছে।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের টায়ার জ্বালিয়ে জোট সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। পুলিশ করাচি এবং লাহোরে খান সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান থেকে পানি ছুড়ছে। করাচিতে নার্সারির কাছে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। তারা পাথর ছুড়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয়। রাস্তার বাতি ছিঁড়ে ফেলে এবং একটি বাস ভাঙচুর করে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাওয়ালপিন্ডির মুরি রোডে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেলও ছুড়েছে পুলিশ।
এক বিবৃতিতে পিটিআই ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং পার্টি প্রধানের দ্বারা গঠিত জরুরি কমিটির সদস্যদের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সে দেশের একজন ঊর্র্ধ্বতন সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার যে অভিযোগ করেছেন, সেনাবাহিনী ঊষ্মার সঙ্গে তাকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। লাহোরে সপ্তাহান্তের এক সমাবেশে ইমরান খান দাবি করেছেন যে, ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসির গত বছর তাকে হত্যার প্রচেষ্টায় জড়িত ছিলেন এবং ওই হত্যার ষড়যন্ত্রে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও জড়িত। সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ শাখা ইমরান খানের অভিযোগ অস্বীকার করে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই বানোয়াট এবং বিদ্বেষপূর্ণ অভিযোগ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।’