পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার নেপথ্যে কী?

সিলেট নিউজ টাইমস্ ডেস্ক: ক্রেমলিন সেনেট ভবন হিসেবে পরিচিত রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবনের গম্বুজের দিকে একটি বস্তু উড়ে যেতে দেখা গেছে এবং সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে। ছাদের ওপর থেকে কালো ধোঁয়া উড়তে গেছে। বুধবার এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। আর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও তখন ক্রেমলিনে ছিলেন না বলে তার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

তবে ওই ঘটনা ড্রোন হামলা চালিয়ে পুতিনকে হত্যার চেষ্টা হিসেবে দেখে চটেছে রাশিয়া। ইউক্রেনকে দায়ী করে এর জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন রুশ কর্মকর্তা; যদিও ইউক্রেন এ অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।

বলা হচ্ছে, ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু যে ভিডিও ছড়িয়েছে সেটি আসলে যাচাই করা যায়নি। ফলে জল্পনা চলছে, আসলে কী ঘটেছে সেখানে?

বিবিসি বলছে. সেটি কি ড্রোন হামলা? দৃশ্যত তাই দেখা গেছে। কিন্তু কে এই আক্রমণ চালিয়েছে? ইউক্রেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরের লোকেরা, নাকি রাশিয়ারই কোনো কারসাজি? নাকি অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর কোনো কৌশল?

বিবিসিরি রুশ সম্পাদক স্টিভ রজেনবার্গ বলছেন, এসবের অনেক কিছুই অস্পষ্ট। ক্রেমলিন বলছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ইউক্রেন ড্রোন হামলা চালিয়েছে। কিন্তু পুতিনকে হত্যাচেষ্টার বিষয়টি অসম্ভবই মনে হচ্ছে। ক্রেমলিনে পুতিনের একটি ব্যক্তিগত অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। প্রধান বাসভবন সেখান থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে।

এমনকি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনও এ অভিযোগ নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সন্দেহ প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করেছে বিবিসি। রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত চ্যানেল ওয়ানের ভিয়েমা নিউজ বুলেটিনে এক বিশ্লেষক বলেন, ড্রোন দিয়ে চালানো এ ধরনের বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতি হয় না। ফলে স্পষ্টত এ আক্রমণ কেবল লোকদেখানোর জন্য।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আমরা পুতিন বা মস্কোতে হামলা চালাইনি। আমরা আমাদের ভূখণ্ডে লড়ছি। আমাদের গ্রাম ও শহর রক্ষা করছি। ওই আক্রমণ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্রও আমাদের হাতে নেই।
কিন্তু আসলেই যদি ইউক্রেন বা কিইভের প্রতি সহানুভূতিশীল রাশিয়ার কোনো গোষ্ঠী এই অপারেশন চালায়, কিংবা যদি তা শুধু লোকদেখানোর জন্যই হয়, তা হলে বিষয়টি কেমন হবে?

বিবিসি বলছে, সেটি হলেও রাশিয়ার জন্য তা হবে চরম বিব্রতকর। রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবন বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত ভবনগুলোর একটি। সেখানে মস্কোর সমস্ত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সত্ত্বেও বিস্ফোরক সমৃদ্ধ দুটি ড্রোন অনুপ্রবেশ করেছে। এ ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধে জ্যামিং সিস্টেমে ক্রেমলিনকে এমন বিপজ্জনক ড্রোন নির্দিষ্ট দূরত্বে রাখতে হবে।

পুতিন বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত নেতাদের একজন। মস্কোতে তার অনুষ্ঠান ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। আকাশ ও সড়কপথ বন্ধ রেখে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা যানের দীর্ঘ সারিও দেখা যায়।

কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবনের মতো জায়গায় ড্রোন হামলার ঘটনায় এখন যে প্রশ্ন উঠছে তা হলো, প্রেসিডেন্ট পুতিন আসলে কতটা সুরক্ষিত? আরও প্রশ্ন উঠছে, রুশ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এতটা নড়বড়ে?

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *