পাঁচ সিটির ভোট সুষ্ঠু করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাহায্য চাইল ইসি

নিউজ ডেস্ক:

আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য নির্বাচনে সহযোগিতা করতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে চিঠি দিচ্ছে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে বিশেষ বিধানের কথা মনে করিয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ ধরনের চিঠি চালাচালি রুটিন কাজের অংশ। বিশেষ কিছু নয়।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান উলি­খিত বিষয়ের একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর বিধান অনুসরণ এবং ইসিকে সহযোগিতা দিতেই চিঠি দিয়েছে ইসি।

ইসি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠিতে জানায়, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এসব নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচনসংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে।

উলি­খিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে থেকে কারও কারও নির্বাচনে অন্যান্য দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন হতে পারে। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে থেকে উল্লে­খযোগ্য সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হবে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার স্থাপনা বা অঙ্গন ভোটকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হবে।

ইসি জানায়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি-৩ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তার দয়িত্ব পালনে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের যে কোনো ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে এবং অনুরূপভাবে নির্দেশিত হলে ওই ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ উলি­খিত দায়িত্ব পালন বা এরূপ সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে।

ওই বিধিমালার বিধি ৮৯ অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর ১৫ দিন সময় অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া উল্লি­খিত কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলি করা যাবে না। নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুসারে কোনো ব্যক্তি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে নিয়োগের পর নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।

ইসি আরও জানায়, নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি মোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে তারা ইসিকে অতীতের ন্যায় সহায়তা দেবেন। নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অব্যাহতি না দেওয়া পর্যন্ত যাতে তাদের অন্যত্র বদলি করা বা ছুটি না দেওয়া হয় অথবা নির্বাচনি দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো কাজে নিয়োজিত না করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *