ঢাকা-টোকিও বিনিয়োগ সম্পর্ক উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

নিউজ ডেস্ক::

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ৫০ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল্যায়ন করে উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি নিশ্চিত যে জাপানের সঙ্গে আমাদের গত পঞ্চাশ বছরের ঈর্ষণীয় সহযোগিতা আগামী পঞ্চাশ বছর এবং তারপরেও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আসুন আমাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে উচ্চস্তরে নিয়ে যাই।

বৃহস্পতিবার সকালে টোকিওর ওয়েস্টিনের সাকুরায় জাপানিজ বিজনেস লিডারদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ দশকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃষ্টান্তমূলক ফলাফল দেখে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশে জাপানের বৃহত্তর পদযাত্রার প্রত্যাশা আমাদের। তিনি জাপানের ব্যবসায়ীদের মতামতকে গুরুত্ব দেন এবং তাদের পরামর্শগুলো নোট করেছেন। টোকিওতে আমাদের দূতাবাস বাংলাদেশে আপনাদের উদ্যোগকে সহযোগিতা ও সহজতর করতে প্রস্তুত। অনুগ্রহ করে আপনাদের জন্য অপেক্ষারত ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনাগুলো অনুসন্ধান করতে বাংলাদেশে আসুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে জাপানি কোম্পানির (আরও জাপানি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে) উত্থাপিত বেশ কয়েকটি নিয়ন্ত্রক ও নীতিগত সমস্যা সমাধান করেছেন। তিনি নিজে বাংলাদেশ-জাপান জয়েন্ট পাবলিক-প্রাইভেট ইকোনমিক ডায়ালগ (পিপিইডি) গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন এবং তিনি সন্তুষ্ট যে পিপিইডির ৫ম রাউন্ড ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল জাপানে তার আগমনের ঠিক আগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি অব্যাহত রাখব এবং বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আপনাদের সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করব। দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের সবচেয়ে উদার বিদেশি বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক খরচ, প্রচুর মানবসম্পদ, উচ্চ ক্রয়ক্ষমতাসহ বিশাল দেশীয় ভোক্তা বাজার এবং ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য একটি অত্যন্ত লাভজনক অবস্থান হিসেবে দ্রুত আবির্ভূত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার উন্নত করার মাধ্যমে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র হতে সচেষ্ট। তারা সারাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই-টেক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করছেন। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগের কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পরিকল্পিত অবকাঠামোগত ভিত্তি তৈরি করছে। আজ আমি আপনাদের খোলামেলা এবং উৎপাদনশীল ধারণাগুলো শুনে খুশি। এটি আমাদের বন্ধুপ্রতিম উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত ও শক্তিশালী করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ ও জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান গত বছর দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে। আমরা এখন আগামী ৫০ বছরে আমাদের সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে; বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে যখন আমরা আমাদের বিস্তৃত অংশীদারিত্ব এবং বিগ-বি উদ্যোগের অধীনে জাপানের প্রতিশ্রুতিতে প্রবেশ করি।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *