জাতিসংঘ মহাসচিবের ওপরও নজরদারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি কিছু গোপন তথ্যের নথি কয়েক দিন আগে ফাঁস হয়েছে। ফাঁস করা এসব নথি থেকে বিভিন্ন তথ্য জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়া, ইসরাইলসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি চালানোর খবর। এবার জানা গেল, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ওপরও নজরদারি করেছে মার্কিন গোয়েন্দারা।

মূলত ওই গোপন নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস রাশিয়ার দাবি-দাওয়াগুলো মেনে নেওয়ার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলেন।

একটি নথিতে গুতেরেস এবং তার ডেপুটির মধ্যে হওয়া কথোপকথনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের অবস্থান এবং আফ্রিকান একটি দেশের নেতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে অপর এক নথিতে।

গোপন নথিতে ‘জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায়’ রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তির কথা বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, এই চুক্তিটি অক্ষুন্ন রাখতে গুতেরেস এতটাই তৎপর হয়েছিলেন যে, তিনি রাশিয়ার দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার কথাও বলেছিলেন। তিনি রাশিয়ার খাদ্য শস্য রপ্তানির বিষয়টি শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়েছিলেন। আর এটি করতে গিয়ে যদি রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা পাওয়া প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে হয় সেটিতেও রাজি ছিলেন তিনি।

এছাড়া এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে গুতেরেসের কিছু কর্মকাণ্ড ‘ইউক্রেনে অপরাধ সংঘটিত করার জন্য রাশিয়াকে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করছিল’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে নথিতে।

তবে গুতেরেসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, যুদ্ধের বিরূপ প্রভাব যেন গরীব দেশগুলোর ওপর না পড়ে, গরিব দেশগুলো যেন প্রয়োজনীয় খাবার ও সার পায় সেটি নিশ্চিতেই শস্য চুক্তি নিয়ে এতটা তৎপর ছিলেন গুতেরেস।

জাতিসংঘের আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গুতেরেস রাশিয়ার পক্ষপাতিত্ব করেননি কখনই। তিনি যুদ্ধের শুরু থেকেই মস্কোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন।

এছাড়া অপর এক নথিতে গুতেরেস এবং তার ডেপুটি আমিনা মোহাম্মদের মধ্যে হওয়া একটি কথোপকথনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আমিনা মোহাম্মদের সঙ্গে গুতেরেস ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনের সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর উরসুলা বলেছিলেন, ইউরোপের উচিত অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানো। আমিনা মোহাম্মদের সঙ্গে কথোপকথনে গুতেরেস জানিয়েছেন, উরসুলার এমন সিদ্ধান্তে তিনি ‘হতাশ।’

অপরদিকে আমিনা মোহাম্মদ গুতেরেসকে আফ্রিকার নেতাদের একটি সম্মেলনের কথা বলেন। তিনি জানান, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুতো ‘দয়ামায়াহীন’ এবং তাকে তিনি ‘বিশ্বাস করেন না।’

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *