‘ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার ক্ষমতা আরপিওতে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে না’

নিউজ ডেস্ক:: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের বিশেষ ক্ষমতা আরপিওতে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে না।

ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে আরপিও সংশোধনীতে প্রস্তাব দেওয়া থেকে সরে এসেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে পরিপত্র জারি করে এ ক্ষমতা আরোপের বিধান বলবৎ থাকবে।

সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা এ তথ্য জানান।

‘নির্বাচন ভবনে’ রাশেদা সুলতানা আরও জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরও তা বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে রাখার প্রস্তাবও বহাল আছে।

ইসি সূত্র জানায়, ইভিএমে ভোটার শনাক্তে আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ না মিললে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার) নিজ আঙুলের ছাপ দিয়ে ব্যালট ইস্যু করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তার আঙুলের ছাপ দিয়ে কত শতাংশ বা কতজন ভোটারের ব্যালট ইস্যু করতে পারবেন তা নিয়ে আরপিওতে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। এমনকি বিধিমালাতেও তা স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে কয়েকটি নির্বাচনে বিতর্ক ওঠে। এ অবস্থায় বর্তমান কমিশন নির্বাচনে স্বচ্ছতার স্বার্থে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ব্যালট ইস্যুর ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ওই ধারা যুক্তের প্রস্তাব থেকে সরে আসে ইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদা সুলতানা বলেন, সহকারি প্রিসাইডিং অফিসারে আঙ্গুলের ছাপে ইভিএমে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেওয়ার বিষয়টি আরপিওতে নির্ধারিত করে দিতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা জানান-এটা বিধিমালা দিয়েও করা সম্ভব। আমরাও দেখলাম বিধিমালা ও পরিপত্র দিয়ে নির্ধারণ করা সম্ভব। তাই ওই প্রস্তাব আর আরপিও সংশোধনীতে থাকছে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসিনি। প্রতিটি ভোটের আগেই আমরা সার্কুলার দিতে পারব। কমিশন সার্কুলার দিলে সেটাও আইন। আমরা আরপিওতে পাচ্ছি না। তবে বিধি দিয়ে ১ শতাংশ নির্ধারণ করতে পারব। আমরা সার্কুলার দিয়ে আগেও করেছি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের গেজেট হওয়ার পর অনিয়ম পাওয়া গেলে ওই ফলাফল বাতিলে আরপিও অনুযায়ী তা বাতিল করার ক্ষমতা ইসির নেই। আরপিওতে ওই ধারা সংশোধন করে ফলাফল ঘোষণার পরও তা বাতিলে যেন ক্ষমতাটা কমিশনের হাতে থাকে সেই প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় যুক্তি দিয়ে বলল, ৯১ ধারা দিয়ে এটা করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা হলো ৯১ ধারা দিয়ে আসলে এটা সম্ভব নয়। ময়মনসিংহের একটি নির্বাচনের উদাহরণও দেওয়া হলো। আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আমাদের যুক্তি মেনে নিয়ে বলেছেন, কোনো অসুবিধা নেই।

আরপিও সংশোধনীর প্রক্রিয়া কোনো পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, এখন আরপিও সংশোধনী মন্ত্রিসভায় যাবে। এরপর সেটা সংসদে পাশ হবে। মন্ত্রিসভা ও সংসদ ঠিক করবে-সংশোধনী প্রস্তাবের কোনটা রাখবে, আর কোনটা রাখবে না।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *