‘নির্যাতনে নয় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ব্যবসায়ী রবিউল’

নিউজ ডেস্ক:: গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানা পুলিশের নির্যাতনে ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম (৪৫) মারা যায়নি। তদন্ত কমিটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে। তবে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওই থানার ওসিকে ক্লোজ এবং দুই এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম।

সাংবাদিকদের তিনি জানান, অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার পুলিশ পেয়ারা বাগান এলাকা থেকে সুতা ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামকে আটক করে। ১৮ জানুয়ারি রাতে থানা থেকে তাকে ছেড়ে দিলে বাসায় ফেরার পথে ঢাকা-বাইপাস সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় রবিউল গুরুত্বর আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই তিনি মারা যান।

তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহতের ভাই অজ্ঞাত ট্রাক ও চালকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটি ৮৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এছাড়া ভিকটিমের পরিবারসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যও নেওয়া তদন্ত কমিটি। হাসপাতালের চিকিৎসকও মৃত্যুর কারণ দুর্ঘটনাজনিত বলে উল্লেখ করেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে কমিটি তদন্ত করে পর্যবেক্ষণসহ একটি সুপারিশ প্রদান করে। সুপারিশে ওই ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে একজন আটক ব্যক্তিকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি নেওয়া হয়নি। থানার সিসি ক্যামেরাও অকেজো ছিল। আটক ব্যক্তিকে রাতে বাসায় পৌঁছে দেওয়া উচিত ছিল। এসব ক্ষেত্রে থানার ওসির দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতি রয়েছে। যার কারণে ওসি আব্দুল মালেক খসরুকে ক্লোজ ও এএসআই মাহবুবুর রহমান এবং নুরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়টি এখনো তদন্তনাধীন রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে পুলিশের কারো কোনো গাফিলতি বা কর্তব্যকাজে অবহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানার ওসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইজিপি বরাবর সুপারিশসহ পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা, ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ যে দুটি মামলা দায়ের করেছিল সেগুলোও তদন্তনাধীন রয়েছে এবং অহেতুক কাউকে হয়রানি না করার বিষয়ে পুলিশের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *