স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে না আনলে দেশ টিকবে না: হাইকোর্ট

নিউজ ডেস্ক:: স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে, না হলে দেশ টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে উদ্দেশ করে মঙ্গলবার বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

১৭ জানুয়ারি দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ব্যাখ্যা চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। আদালতের নির্দেশে সকালে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

হাইকোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ডায়াসের সামনে ডেকে বলেন, এ দেশের মানুষ কিন্তু গরিব। মানুষ বিপদে পড়লেই চিকিৎসকের কাছে যান। এটা একটা মহান পেশা। চিকিৎসকরাও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেন। তাদের ব্যক্তি জীবন আছে বলে মনে হয় না। তারপরও মানুষ সেবা পান না। আপনি বিষয়টি দেখবেন। গরিব দেশ হিসাবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনো কিছু গেলে আপনারা গুরুত্ব দেবেন।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আদালতে বলেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। এরকম ভুল আর হবে না। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। এ সময় লিখিতভাবে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

হাইকোর্ট বলেন, কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্য সেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেওয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে মন চায় না। এটা শোভনীয় নয়। আমরা সময় দিয়ে থাকি। বারবার সময় দেওয়ার পরও যখন আদালতের আদেশ মানা হয় না, তখন আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, এটা কনসিডার করেন। স্বাস্থ্য খাতের বিষয়টি কোভিডের কারণে হয়েছে। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, সরকার তো কোনো খাতেই টাকা কম দেয় না। ফরিদপুর মেডিকেলে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লে­খ করে আদালত বলেন, একটি জিনিসের দাম বাজারের তুলনায় ৪০০ গুণ হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না। আমরা নিজেরা দেশ চালাচ্ছি। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, সব জায়গায় চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরে আদালত এই মামলার আদেশের জন্য ২ মে দিন ধার্য করেন।

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

অ্যাডভোকেট মো. জেআর খান রবিন ওইদিন বলেছিলেন, কারা কর্তৃপক্ষ আজ প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছে, কারাগারগুলোতে ৯৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্যপদে নিয়োগের জন্য সময় প্রয়োজন। পরে আদালত ৮ জানুয়ারির মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেন।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *