বাংলাদেশে খেলা সেই ছেলেটিই হারিয়ে দিল জার্মানিকে

স্পোর্টস ডেস্ক::  দোহার খলিফা স্টেডিয়ামে বুধবার জার্মানির বিপক্ষে জয় পেয়েছে জাপান। যে জাপানি ফরোয়ার্ডের নৈপূন্যে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হৃদয় ভেঙে গেছে, সেই তাকুমা আসানো আট বছর আগে খেলে গেছেন বাংলাদেশে।

২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় দল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল জাপান অনূর্ধ্ব-২১ দলের বিপক্ষে। ২০১৬ রিও অলিম্পিকের প্রস্তুতি হিসেবে তখন বিভিন্ন দেশে প্রীতি ম্যাচ খেলছিল জাপানের দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় ৯ দিনের সফরে সেবার থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশে আসে জাপানের যুবারা।

জাপানি যুবদলকে সেদিন মাঠে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন জামাল ভূঁইয়া, তপু বর্মণ, মামুনুল ইসলাম, হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসরা। ছোট ছোট পাস, টেকনিক আর স্কিলের ঝলক দেখিয়েছিলেন তারা।

বাংলাদেশ জাতীয় দল সেদিন পাত্তাই পায়নি জাপানের অনূর্ধ্ব-২১ দলটির কাছে। ১৫ মিনিটের জাপানি সুনামিতে উড়ে যায় বাংলাদেশ। মামুনুলদের জালে সেদিন ৩ গোল দেয় জাপান।

এর মধ্যে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমে প্রথম ও তৃতীয় দুটি গোল করেন আসানো। সেই গোল যেন বুধবার আবারও করলেন এই জাপানি ফরোয়ার্ড। তিনি শুধু গোলই করেননি, এই জয়ে এশিয়ার ফুটবলের নতুন সূর্যোদয়ও যেন দেখাতে শুরু করেছে জাপান।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সেদিন ম্যাচটি শুরু হওয়ার আগে জাপানি ফুটবলাররা একটি করে চাবির রিং উপহার দেন বাংলাদেশের ফুটবলারদের। আসানোর গোলের পর ঢাকায় বসে সেই পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল বাংলাদেশের ডিফেন্ডার তপু বর্মণের, ‘আসানো গোল দিতেই আমার ওই দিনের ম্যাচের কথা মনে পড়ল। ওরা সেদিন খুবই ভালো খেলেছিল। আমরাও দুই-তিনটি সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু গোল করতে পারিনি। জাতীয় সংগীত গাওয়া শেষে হাত মেলানোর সময় ওরা আমাদের একটা চাবির রিং দিয়েছিল। আমার কাছে সেই চাবির রিংটি এখনো আছে।’

মামনুল বলেন, ‘ওরা একটা লক্ষ্য নিয়ে খেলে আজ এখানে। বিশ্বের যে কোনো দল লিগে বা দেশের হয়ে যখন খেলবে, তাদের অবশ্যই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে। ঘরোয়া ফুটবল বা জাতীয় দল, আমাদের কোথাও সেই পরিকল্পনার ছাপ নেই। ওরা যখন এসেছে, তখন আমরা খেলেছি জাতীয় দলের হয়ে। আর ওরা অলিম্পিকের দলটা নিয়ে এসেছিল। আজ থেকে আট বছর আগে ওরা যে লক্ষ্য নিয়ে খেলতে শুরু করেছিল বিশ্বকাপে জার্মানিকে হারিয়ে সেই সফলতার একটি প্রমাণ দিয়েছে জাপান।’

আসানো যেন চোখে আঙুল দিয়েই দেখিয়ে দিলেন সুন্দর পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের ফল কী হয়।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *