সেই বক্তব্যের কারণে জাপানি রাষ্ট্রদূতকে তলব, যা জানালেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক:: বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দেওয়া জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকিকে ডেকে নিয়ে ভিয়েনা কনভেনশনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে ঢাকা। ভিয়েনা কনভেনশন মানলে বিদেশি কূটনীতিবিদরা যে কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন না- ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূতকে মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকিকে তলব করার কথা বুধবার জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এক ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের অ্যাম্বাসেডরকে ডেকেছিলাম। তাকে যা যা বলা দরকার, আমরা বলেছি।’

গত সোমবার ঢাকায় সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেন জাপানি রাষ্ট্রদূত।অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি পুলিশ কর্মকর্তারা আগের রাতে ব্যালট বক্স ভর্তি করেছেন। অন্য কোনো দেশে এমন দৃষ্টান্তের কথা শুনিনি। এভাবে ব্যালট বাক্স ভর্তির ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে। এখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার, এটাই আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি।’

একজন বিদেশি কূটনীতিকের এমন বক্তব্য নিয়ে আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার জাপানি রাষ্ট্রদূত ইকো নাওকিকে তলব করে ঢাকা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তার কাছে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফর নিয়েও আলোচনা হয়।

রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কী বলা হয়েছে- ফেসবুক পোস্টে তার বিস্তারিত বলেননি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তবে ভিয়েনা কনভেনশনের একটি ধারা ওই পোস্টে তুলে ধরে ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারের বিষয়’ কূটনীতিকদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি লিখেন, ‘যদি আপনাদের কেউ ভুলে গিয়ে থাকেন: ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেশনের ৪১ ধারার অনুচ্ছেদ ১ কূটনীতিবিদদের গ্রহণকারী দেশের আইন ও বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয় এবং ওই জাতির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িত হওয়া থেকে সুস্পষ্টভাবে বিরত থাকতে বলে।’

ভিয়েনা কনভেশনের ৪১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যারা (কূটনৈতিক) দায়মুক্তি ও সুবিধা ভোগ করে, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে গ্রহণকারী দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। ওই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাও তাদের দায়িত্ব।’

বিষয়টি নিয়ে আর বিস্তারিত কিছু না বলে প্রতিমন্ত্রী লিখেন, ‘সবকিছু বিস্তারিত গণমাধ্যমে বলার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। তাই এই বিষয়ে কোনো গণমাধ্যমে আমরা আর কোনো বক্তব্য দিতে চাই না।’

শাহরিয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক আরও গভীর হবে আসন্ন প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মধ্যে দিয়ে এই প্রত্যাশায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই সফর বাংলাদেশের এবং জাপানের সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে বলে আশা করি।’

উল্লেখ্য, আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর জাপান সফরের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

কমেন্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *